শেষ আপডেট: 14th September 2024 13:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শনিবার সকালে হঠাৎই স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বেলা পৌনে ১টা নাগাদ যখন মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি মা ফ্লাইওভারে ওঠে তখনই অনেকের ব্যাপারটা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। দেখা যায় সেই সন্দেহ অমূলক নয়। মুখ্যমন্ত্রী সোজা পৌঁছে গিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনে। ঠিক যেখানে জুনিয়র ডাক্তাররা প্রায় ৯৬ ঘণ্টা ধরে অবস্থান আন্দোলন করছেন।
মুখ্যমন্ত্রী ধর্নাস্থলে পৌঁছতেই জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান তুলতে থাকেন। ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে যায়। দেখা যায় তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর হাতে মাইক তুলে নিয়েছেন। ডাক্তারদের শান্ত হতে বলেন তিনি। কিন্তু পরিস্থিতির আকস্মিকতায় ব্যাপারটা থিতু হতেই সময় লেগে যায়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের অনুরোধ করতে এসেছি। যদি বলতে দেন খুশি হব’। কিন্তু এর পরেও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঠিক করতে সময় লাগে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেন, “শান্ত হন। আমিও ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি। আপনাদের মাইকটা কি ঠিক করা যাবে? আমি যখন এসেছি তখন আমি কাজ করব”।
কোলাহল কিছুটা কমতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাকে পাঁচ মিনিট বলতে দিন। আমার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, আমি আমি আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি। আমি আপনাদের আন্দোলনকে কুর্ণিশ জানাই।”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কাল সারারাত ঝড়জল হয়েছে, তাতে আপনাদের যেমন কষ্ট হয়েছে, আমারও কষ্ট হয়েছে। আমি ঘুমোতে পারিনি। আজ তেত্রিশ, চৌত্রিশ দিন হয়ে গেল। আমারও ঘুম হয়নি। কারণ, আপনারা যখন রাস্তায় থাকেন, আমাকেও জেগে থাকতে হয়। এত দুর্যোগের মধ্যে আপনারা অনেক কষ্ট পেয়েছেন। আমি কথা দিচ্ছি, যদি আপনারা কাজে ফিরতে চান, আমি আমার অফিসারদের সঙ্গে তা নিয়ে কথা বলব। আমি একা সরকার চালাই না। মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব রয়েছেন। কারও দোষ থাকলে ব্যবস্থা নেব।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এ কথাগুলো বলেন, তখন জুনিয়র ডাক্তাররা কার্যত শান্ত হয়েই শোনেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন, হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্যবস্থাতেও তিনি সংস্কারে হাত দিয়েছেন। হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে রাজনৈতিক নেতাকে সরিয়ে অধ্যক্ষ বা সুপারদের সেই পদে বসানোর আশ্বাস দেন।
তাঁর কথায়, আপানার আমার ভাইবোন। আমি যদি আপনাদের ধর্না মঞ্চে আসতে পারি, তাহলে আমি বাকিটাও পারব। আমাকে কটা সময় দিন, এক দিনে তো পারব না। দুর্নীতি নিয়ে আপনাদের কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে নিশ্চয়ই তদন্ত করে সাজা দেব। তাই আপনারা কাজে ফিরুন। আমি জোর করে তুলে দিতে চাই না। আমি আপনাদের দিদি হিসাবে বলতে এসেছি, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নয়। আমি আপনাদের আন্দোলনের সমব্যথী, সমসাথী। ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন।