শেষ আপডেট: 21st October 2024 23:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে টানা ২ ঘণ্টা বৈঠকের পর ১৭ দিনের মাথায় 'আমরণ অনশন' প্রত্যাহার করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। নবান্নে বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল এদিন ধর্মতলার মঞ্চে ফিরে আসেন। ফোরামের জেনারেল বডির বৈঠক হয়। তার পর আনুষ্ঠানিক ভাবে অনশন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসকদের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেন কুণাল ঘোষ। বললেন 'ভাল সিদ্ধান্ত।'
আরজি কর কাণ্ডে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে প্রথম থেকেই বারবার বিভিন্ন মন্তব্য করতে দেখা গেছে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকে। গতকালই কুণালকে 'বয়কটের' সিদ্ধান্ত নেয় ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্ট। রবিবার ধর্মতলার অনশন মঞ্চ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এবার থেকে তাঁরা কুণালকে নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেবেন না। তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদকে 'অভদ্র' বলেও কটাক্ষ করা হয়।
এরপরই জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে কটাক্ষের সুরে কুণাল বলেন, 'বিচার চাইলে রাস্তায় নাটক না করে আমার কাছে আসুক। কীভাবে আইনসম্মত বিচার পেতে হয়, শিখিয়ে দেব!'
যদিও সোমবার জুনিয়র ডাক্তাররা অনশন প্রত্যাহার করার পর প্রথমেই প্রতিক্রিয়া দেন এই তৃণমূল নেতা। ডাক্তারদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান এবং মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, 'জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন প্রত্যাহার ও স্বাস্থ্য ধর্মঘট থেকে সরে আসা ভাল সিদ্ধান্ত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিভাবকের মতো সংবেদনশীল সরকারের প্রধানের ভূমিকায় ছিলেন। তিনি অতীতেও গিয়েছেন ধর্না মঞ্চে, বাড়িতে ডেকেছেন, আলোচনা করেছেন, নবান্নে ডেকেছেন, মুখ্য সচিবকে পাঠিয়েছেন।'
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রশংসা করেন কুণাল। দেশের মধ্যে 'সেরা' বলেও উল্লেখ করেন। কুণালের কথায়, 'মনে রাখতে হবে, বাংলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভারতের মধ্যে সেরা। সিপিএম জমানার থেকে অনেক এগিয়ে, বিজেপি রাজ্যগুলোর থেকে অনেক এগিয়ে। এখানে আরও যা যা কাজ বাকি আছে, বা কোথাও কোনও কাজ ঠিক করতে হলে বা কোনও বিচ্ছিন্ন খারাপ ঘটনা রুখতে গেলে যা যা করার দরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই করতে পারবেন।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর বাংলার মানুষের আস্থা রয়েছে। এই বলে ফের জুনিয়র ডাক্তারদের প্রসঙ্গে ফিরে যান তিনি। বলেন, 'জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে আমাদের বার বার অনুরোধ ছিল, বাম, অতি বাম বা এদের প্ররোচনায় পা দিয়ে কৃতি ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের শরীরে চাপ নেওয়াটা ঠিক হচ্ছে না। তাঁরা অনশন তুলে নিয়েছেন। স্বাস্থ্য ধর্মঘটের পথ থেকেও সরে আসছেন, এটা ভাল সিদ্ধান্ত।'
জুনিয়র ডাক্তাররা যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পিলার ও তাঁদের সহযোগিতায় বাংলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আরও ভাল হবে, সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, 'আরও ভাল ভাবে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এগোবে।'
সবশেষে সাধারণ মানুষের কথা ভাবার আবেদন জানান এই তৃণমূল নেতা। জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, 'সরকারি জায়গায় কোনও ত্রুটি সংশোধনের দরকার হলে সেটা যেমন হবে, তেমনই প্রাইভেট সেক্টরে যাতে সাধারণ মানুষের ওপর চাপটা কমে, জুনিয়র ডাক্তাররা সেটাও খেয়াল রাখবেন আমরা আশা রাখব।'