বিধ্বংসী আগুন
শেষ আপডেট: 2 May 2025 15:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুক্রবার দুপুরে হঠাৎই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হল সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে। একটি রাসায়নিক কারখানা থেকে আচমকা আগুন ও বিস্ফোরণের শব্দে চমকে ওঠেন এলাকার কর্মরত মানুষজন। কারখানা চত্বরে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরবেলা আচমকাই কারখানাটি থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দও কানে আসে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের। আগুনের তীব্রতা দেখে সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকল বিভাগে।
দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় দমকলের অন্তত ছ’টি ইঞ্জিন। রয়েছেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, 'আমি খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে এখানে এসে গিয়েছি। নিয়ন্ত্রনে আসতে একটু সময় লাগবে। আসলে অনেক দাহ্য পদার্থ আছে তো, সেখানেই সমস্যা। তবে যতটুকু খবর পেয়েছি, ভিতরে কেউ আটকে নেই।'
প্রথমে বাইরে থেকে হোসপাইপের সাহায্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু হয়। তবে আগুনের প্রচণ্ড উত্তাপে কারখানার ভিতরে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি বলেই জানিয়েছেন দমকলকর্মীরা। তাঁদের কথায়, আগুন কিছুটা কমলেই ভিতরে ঢুকে শুরু হবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের কাজ। বিস্ফোরণের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে রাসায়নিক উপাদান থাকায়, পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে বলেই আশঙ্কা।
কয়েকদিন আগেই কলকাতার বড়বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ১৪ জন। তাঁরা সকলেই ভিন্রাজ্যের শ্রমিক, কাজের সন্ধানে এসেছিলেন এই শহরে। তবে বাড়ি ফেরা আর হল না। ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে বিষাক্ত ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে। আগুনের হাত থেকে বাঁচতে কেউ কেউ প্রাণপণ লড়াই করেছেন।
জ্বলন্ত হোটেল ভবনের ভিতরে আটকে পড়া মানুষগুলোর চিৎকার, কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী আর ছুটে আসা ফায়ার ইঞ্জিন—সব মিলিয়ে যেন এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্নে পরিণত হয় বুধবার রাত। কয়েকজনের দেহে আগুনে পোড়ার ক্ষতও পাওয়া গেছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিদর্শন করেন হোটেলটি। সাধারণ মানুষকে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার মৃতদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে।