শেষ আপডেট: 17th September 2024 20:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে কলকাতা তথা রাজ্যের মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে পুলিশের ওপর। বাসে, ট্রেনে কান পাতলেই কেউ না কেউ পুলিশকে নিয়ে কটূ কথা বলছেন। তার মধ্যে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের অপসারণ, টালা থানার ওসির গ্রেফতারি পুলিশের ভাবমূর্তি আরও খারাপ করে দিয়েছে আমজনতার কাছে। তবে পুলিশ দমে যায়নি। নিজেদের ডিউটি পালনে তাঁরা কালবিলম্ব করছে না।
অভিনব প্রেম প্রস্তাবের মতো এ যেন অভিনব কিডন্যাপ! ঘড়ির কাঁটায় তখন ৭টা ৪০। বর্ষণসিক্ত শহরে বিশ্বকর্মা পুজোর আগের সন্ধ্যায় গাড়ির ঢল। স্বভাবতই ট্রাফিক পুলিশের ব্যস্ততার অন্ত নেই। আচমকাই পাটুলির অদূরে ঢালাই ব্রিজের কাছে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল শামিম হোসেন মোল্লাকে কয়েক জন এসে জানান, এই পথেই একটি টেম্পো ট্রাভেলর গাড়িতে অপহরণ করে তোলা হয়েছে এক যুবককে। গাড়িটি পাটুলির দিকে যাচ্ছে।
সময় নষ্ট করেননি ওই পুলিশ কর্মী। সঙ্গে সঙ্গে ওয়াকিটকিতে বিষয়টি তিনি জানিয়ে দেন পাটুলির সেক্টর অফিসার সার্জেন্ট সমীর সাঁতরা ও পাটুলির মোড়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক কনস্টেবল মহম্মদ ইন্দাদুল মল্লিককে। পাটুলির মোড়ে আটকানো হয় গাড়ি। নামানো হয় চালক বিশ্বজিৎ দত্ত ও দুই আরোহী বিভাস সর্দার ও ঋষি সিংকে। কেন আটকানো হয়েছে গাড়ি তা ততক্ষণে জেনে ফেলেছেন এলাকার মানুষ। শুরু হয় মারধর। গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় রাজা নস্কর নামের ওই যুবককে।
পুলিশের তরফে ইন্সপেক্টর শেখ নাজমূল হোসেন জানিয়েছেন, স্বপ্না ছাতুই নামের এক তরুণী অপহৃত যুবকের সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা বাইকে করে যাচ্ছিলেন। তরুণী জানিয়েছেন, এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে ওই টেম্পো-ট্রাভেলার গাড়িটির সঙ্গে তাঁদের বাইকটির রেষারেষি হয়েছিল। তা নিয়ে দু-তরফে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। সেই কারণেই হঠাৎ গাড়ি থেকে নেমে তিন যুবক তাঁদের মারধর করতে শুরু করে। তারপরই রাজাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
তরুণীর অভিযোগের প্রেক্ষিতেই ওই তিনজনকে আটক করে পাটুলি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইন্সপেক্টর শেখ নাজিমূল হোসেন। পুলিশ অপহরণকারী তিন যুবকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে। ওই তিনজনের পাশাপাশি অভিযোগকারী তরুণী এবং রাজাকেও নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে সোমবার ভর সন্ধ্যায় কলকাতার রাস্তায় এমন ঘটনা জানাজানি হতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।