কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল।
শেষ আপডেট: 16 August 2024 10:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত বুধবার মধ্যরাতে আরজি করে হামলার ঘটনায় সমালোচনার মুখে কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টেও তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশ। রাজ্যের গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ।
এমন আবহে আরজি কর নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল সাফ জানিয়ে দিলেন, আরজি করে ছাত্রীকে খুনের ঘটনার তদন্তে পুলিশের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও জায়গা নেই। একই সঙ্গে মানুষ কেন এত অধৈর্য্য হয়ে পড়ছেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন পুলিশের এই শীর্ষ কর্তা।
পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, "আরজি করে ছাত্রী খুনের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের দক্ষ অফিসাররা ছিলেন। ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে আমরা প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করি। এখন এজেন্সি তদন্তে রয়েছে, তারা দেখবে কোথাও কোনও খামতি ছিল কিনা।"
এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতে সেই রাতে হামলার কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে সিপি বিনীত গোয়েল বলেন, মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচি ঘিরে সব জায়গায় প্রয়োজীয় পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তারপরেও এঘটনা ঘটল, তার সবচেয়ে বড় কারণ, একাধিক গুজব।
পুলিশ কেন হামলাকারীদের রোধ করতে পারল না? সিপি বলেন, "ডিসিপির মাথা ফাটায় আমাদের ফোর্স বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, সামলে নিতে সময় লাগে। সেই সুযোগে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে হামলা হয়। ওরা পুলিশের তুলনায় সংখ্যায় অনেক বেশি ছিল। ঘটনায় ১৫ জন পুলিশ কর্মী আহতও হন। একে আমাদের ব্যর্থতা বললে বলুন।"
পুলিশ কর্তা বলেন, হামলার ঘটনায় ইতিমধ্য়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকিদেরও গ্রেফতার করা হবে। কাউকে ছাড়া হবে না।
একই সঙ্গে ছাত্রী খুনের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে একাধিক গুজব ছড়ানো হয়েছিল বলে দাবি করে পুলিশ কমিশনার বলেন, "গুজবের ভিত্তিতে তো পুলিশ কাউকে ধরতে পারে না। স্বাভাবিক মৃত্যু না হলে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়। এটাই নিয়ম। এক্ষেত্রেও সেটাই করা হয়েছিল। এরপর তদন্তের ভিত্তিতে বাকি আইনের ধারা যুক্ত করা হয়। সেটার জন্য তদন্তের সময়টুকু প্রয়োজন। মানুষ কেন অধৈর্য্য হয়ে পড়ছেন?"
খানিক থেমে জবাবও দিয়েছেন নিজেই, "নানা ধরনের গুজব, নানা ভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। কেউ বলছেন গণধর্ষণ হয়েছে। কেউ বলছেন, ১৫০ গ্রাম বীর্য পাওয়া গেছে। কোথা থেকে এল এই তথ্য? এতেই তো বেশি করে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে মানুষের মধ্যে।’’
বিনীত এও বলেন, "কলকাতা পুলিশের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গায় নেই। আরজি করে ছাত্রী খুনের ঘটনায় আমরা কোনও কিছু আড়াল করিনি। কলকাতা পুলিশ বাংলার বাইরেও সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছে।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "‘মৃতার পরিবারকে পুলিশ ফোন করেনি। আত্মহত্যার কথাও পুলিশ বলেনি। এটা নিয়ে অযথা গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’’