শেষ আপডেট: 2nd February 2025 14:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কলকাতার ম্যানহোল কাণ্ডে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে মৃত্যুর কারণ তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। একই সঙ্গে কুম্ভমেলার প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তিনি।
ফিরহাদের কথায়, "আমরা ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠিয়েছি তদন্ত করার জন্য। তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। দুঃখ জনক ঘটনা। আমরা মৃতদের পরিবারের পাশে আছি।ম্যানহোলে কীভাবে মৃত্যু হল, তা খতিয়ে দেখা হবে।"
এরপরই কুম্ভমেলায় সম্প্রতি পদপিষ্ট হয়ে একাধিকজনের মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে ফিরহাদ বলেন, "আমরা বিজেপির মতো নই, যে প্রকৃত মৃত্যুর ঘটনা চেপে গিয়ে গঙ্গায় দেহ ভাসিয়ে দেব। কুম্ভমেলায় যেমনটা হল!"
এদিন সকালে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সের ভিতরে সেক্টর ৬ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অধীনে সাফাইয়ের কাজ চলছিল। ট্যানারির বর্জ্য পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে এক সাফাইকর্মীকে নামানো হয়েছিল। দীর্ঘক্ষণ হয়ে গেলেও তিনি না ওঠায় তাঁর খোঁজে হাইড্রেনে নামেন আরও দু'জন। ওই তিনজনই তলিয়ে যায়। পরে ডুবুরি নামিয়ে তিন সাফাইকর্মীর দেহ উদ্ধার করা হয়। এরা হলেন, ফরজেম শেখ, হাসি শেখ এবং সুমন সর্দার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যে ম্যানহোলে তিন শ্রমিক তলিয়ে গিয়েছিলেন, সেটি প্রায় ১০ ফুট গভীর। পাশাপাশি, ম্যানহোল থেকে বিভিন্ন রাসায়নিকের তীব্র দুর্গন্ধ ভেসে আসছে। বিষাক্ত গ্যাসও থাকতে পারে। তারজেরেই মৃত্যু কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।
সঙ্গত, ম্যানহোল বা নিকাশি নালায় মানুষ নামিয়ে পরিষ্কারের ব্যবস্থাকে ২০১৩ সালে নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল সুপ্রিমকোর্ট। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল, ম্যানহোল সাফাই, মলমূত্র সাফাইয়ের মতো কাজে কোনও মানুষকে দিয়ে করানো যাবে না। এমনকী পরিস্থিতি বিশেষে কাউকে ম্যানহোলে নামাতে হলেও সংশ্লিষ্ট সাফাইকর্মীর জীবন এবং স্বাস্থ্যের সব রকমের নিরাপত্তাও দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
এমনকী কাউকে ম্যানহোলে নামানোর আগে নিশ্চিত হতে হবে সেখানে প্রাণঘাতী গ্যাস আছে কি না। নামানোর আগে সংশ্লিষ্ট কর্মীর মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিশেষ অ্যাপ্রনে ঢেকে রাখার কথাও বলা হয়েছিল। এক্ষেত্রে এসবের কোনও কিছুই মানা হয়নি বলে অভিযোগ। পরিস্থিতির জন্য অবশ্য সাফাই কর্মীদেরই দায়ী করেছেন ফিরহাদ। কলকাতার মেয়রের কথায়, "বললেও কর্মীরা অনেক সময় শোনেন না। এক্ষেত্রে কী হয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।"