কলকাতার বাসে আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদ।
শেষ আপডেট: 23rd August 2024 16:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর হাসপাতালে তরুণী পড়ুয়া-চিকিৎসকের নশংস ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে কেটে গেছে ১৫টা দিন। এখনও বিচার চেয়ে প্রতিবাদে উত্তাল শহর কলকাতা তথা গোটা রাজ্য। দেশেরও নানা জায়গায় চলছে বিক্ষোভ কর্মসূচি। শুধু আয়োজন করে ডাকা মিছিল বা বিক্ষোভ নয়, এই ঘটনা যেন উস্কে দিয়েছে সাধারণ মানুষের ভিতরের রাগ-ক্ষোভ-যন্ত্রণাকেও। এই ভয়াবহ অন্যায় ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই যেন খেপে উঠেছে জনগণ।
এই স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভেরই এক ছবি দেখা গেল কলকাতা শহরের একটি বাসে। অভিযোগ, এক ব্যক্তি সেখানে আরজি কর কাণ্ডের বিরুদ্ধে চলতে থাকা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করছিলেন। শুধু বিরক্তি নয়, তিনি নির্যাতিতার সম্পর্কে এবং তাঁর খুন হয়ে যাওয়া সম্পর্কে কিছু অসংবেদনশীল মন্তব্যও করেন। আর তাতেই গোটা বাসের সকল যাত্রী বিশেষ করে মহিলারা, খেপে গিয়ে রীতিমতো চড়াও হন তাঁর উপর!
এমনই একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে দু'দিন ধরে। এই ভিডিওর সত্যতা 'দ্য ওয়াল' যাচাই করেনি। তবে ভিডিও দেখে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, কলকাতার বাসযাত্রী সাধারণ মানুষ মোটেই মেনে নিচ্ছেন না নির্যাতিতার বিরুদ্ধে একটি খারাপ শব্দও। ঘটনার ১৫ দিন পরেও এতটুকু থিতোয়নি তাঁদের প্রতিবাদের জোয়ার। এতটুকু ফিকে হয়নি প্রতিরোধের দেওয়াল।
ভিডিওয় দেখা গেছে, ভিডিওয় দেখা যায়, ৭৮/১ নম্বর, রহড়া থেকে বাবুঘাট রুটের বাসে এই ঘটনাটি ঘটেছে। বাসের ভিতর প্রবল চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছে। জানলার ধারে বসা এক মাঝবয়সি ব্যক্তির রীতিমতো কলার চেপে ধরেছেন মহিলারা। প্রায় মারধর করার মতো পরিস্থিতি। ওই ব্যক্তি নিজের সপক্ষে কিছু বলতে চাইলেও, তা কেউ শুনছে না।
ভিডিওয় শোনা যাচ্ছে, এক বাসযাত্রী বলছেন, 'এই দেখুন, এই ব্যক্তি আরজি করের নারী নির্যাতনের ঘটনাকে সমর্থন করছেন। বলছেন, এগুলো বাড়াবাড়ি হচ্ছে।' তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, 'যে ডাক্তাররা আমাদের প্রাণ বাঁচিয়েছেন করোনা পরিস্থিতিতে, সেই ডাক্তার আরজি করে ধর্ষিতা হয়েছেন। এই ভদ্রলোক সেটার সমর্থন করছেন। সকলকে উত্ত্যক্ত করছেন।'
এক মহিলাকে বলতে শোনা যায়, 'এই ভদ্রলোক সেই তখন থেকে একটানা বলে যাচ্ছে, কেন মিছিল হচ্ছে, কেন প্রতিবাদ হচ্ছে, কেন বাস ঘুরিয়ে দিচ্ছে। এত অসভ্য অসভ্য কথা বলছেন...' আর এক মহিলা বলেন, 'উনি তখন থেকে বলে চলেছেন, এইরকম ডাক্তারদের এরকমই হওয়া উচিত। সরকারি পয়সায় ফ্রিতে পড়াশোনা করার কথা মনে ছিল না!'
এর পরেই দেখা যায়, এক পুলিশ বাসে উঠে আক্রমণের মুখ থেকে ওই ভদ্রলোককে নিয়ে নেমে যান। তিনি নামার পরেও বাসের লোকজনের রাগ-ক্ষোভ কমেনি। অভিযোগ ওঠে, মহিলা যাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা ছাড়াও কন্ডাক্টরের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেছেন ওই লোকটি। আরজি করের নিহত চিকিৎসককে নিয়ে আপত্তিজনক মন্তব্য তো করেইছেন।
পুলিশের সঙ্গে নীচে নামার পরেও ওই ভদ্রলোক বলার চেষ্টা করেন, সাধারণ মানুষের পথেঘাটে চলাফেরার অসুবিধার কথা। কিন্তু সকলের সমস্বর চিৎকার ও প্রতিবাদে তাঁর কথা কেউই শুনতে রাজি হননি।