অধ্যাপিকা মৌসুমী কুণ্ডু আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বিচার চেয়ে মাথা ন্যাড়া করে ফেলেন। তার উপরেই লাল রঙে লেখেন, বিচার চাই।
শেষ আপডেট: 1st September 2024 20:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সরকারিভাবে কোনও কর্তাব্যক্তি এসে কথা না বললে, ধর্না-অবস্থান থেকে উঠবেন না 'তিলোত্তমা'রা। ভোর চারটে পর্যন্ত ধর্মতলাতেই বসে থাকবেন কয়েক হাজার মানুষ। আজ, রবিবার মহামিছিলের শেষে এমনই ডাক দিলেন 'আমরা তিলোত্তমা' মঞ্চের প্রতিবাদীরা।
আজ, রবিবার দুপুরে কলেজ স্কোয়ারে জমায়েত হতে দেখা যায়, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, উষসী চক্রবর্তী, চৈতি ঘোষাল, সুদীপ্তা চক্রবর্তীর মতো একঝাঁক সেলেব্রিটি-সহ একাধিক পরিচিত মুখকে। উদ্দেশ্য, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে মহামিছিল।
কোনও দলের বা পতাকার নয়, এ মিছিল ছিল সাধারণ নাগরিক সমাজের। তবে আয়োজনে রয়েছে একটি মঞ্চ, যার নাম 'আমরা তিলোত্তমা'। এদিন মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের কপালে বাঁধা বেগুনি ফেট্টিতে একথাই লেখা ছিল।
বিকেলে ধর্মতলায় পৌঁছনোর পরে অবস্থানে বসেন মিছিলকারীরা। এবং সেখান থেকেই জানান, তাঁরা তাঁদের দাবির কথা সরাসরি জানাতে চান সরকারকে। সরকারের তরফে কেউ এসে কথা না বললে, উঠবেন না তাঁরা। সারারাত ধর্না-অবস্থান করবেন। সেই মতোই বসেছেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, দেবলীনা দত্ত।
এদিন গায়ক শোভন গঙ্গোপাধ্যায় একটি পোস্টও করেন, লেখেন, 'সবাই দলে দলে ধর্মতলা আসুন। যতক্ষণ না বিচার পাচ্ছি বসছি আমরা। চলে আসুন, আর পাশের মানুষকে জানান। আমরা সাধারণ মানুষ ধর্নায় বসলাম।' এদিন কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত চলা এই মহামিছিলের ডাক এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁরই সদ্যবিবাহিত স্ত্রী তথা অভিনেত্রী সোহিনী সরকার।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ-খুনের পরে কেটে গেছে ২২ দিন। সিবিআই তদন্ত করছে সঞ্জয় রায়ের নামের এক সিভিক ভলান্টিয়ারের গ্রেফতারি ছাড়া তদন্তের কোনও অগ্রগতির খবর মেলেনি।
এই ঘটনার পরে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন, মিলেছে একাধিক অসঙ্গতি। তারই প্রতিবাদে এবং নারী সুরক্ষার দাবিতে তারপর থেকে লাগাতার মিছিল ও আন্দোলন হচ্ছে শহর কলকাতায়। আজ, ১ সেপ্টেম্বর আরও একটি মহা মিছিলের সাক্ষী হতে চল কলকাতা। পথে নামলেন কাতারে কাতারে মানুষ। সবরকম স্তরের, সব মহলের মানুষকে দেখা গেল বিচার চাইতে।
এদিনের মিছিলে অংশগ্রহণকারী অধ্যাপিকা মৌসুমী কুণ্ডু আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বিচার চেয়ে মাথা ন্যাড়া করে ফেলেন কলেজ স্কোয়ারে মিছিল শুরুর আগে। তার উপরেই লাল রঙে লেখেন, বিচার চাই। মৌসুমীর কথায়, 'নিজের জ্বালাটা আসলে কিছুতেই কমাতে পারছি না। আমি আসলে সেরকম ভাবে লিখে-বলে প্রকাশ করতে পারি না তো। তাই নিজের মতো করে প্রতিবাদ।'
তবে কেবল কলেজ স্কোয়ারে নয়, কলকাতা তথা বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে এদিন মিছিল বের করা হয়েছে নির্যাতিতার বিচার চেয়ে। বেহালা, গোলপার্ক, গড়িয়াহাট, রাসবিহারী, ভবানীপুর, নন্দন, ব্যারাকপুর, চুঁচুড়া, বারুইপুর, বর্ধমান, সোনারপুর, ইছাপুর, নৈহাটি, ইত্যাদি জায়গাতেও মিছিল, জমায়েত, সমাবেশ চলে। এদিন কলকাতার একাধিক স্কুলের প্রাক্তনীরাও বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেছে। মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে বহু খুদেকেও। যোগ দিয়েছেন রূপান্তরকামী নারীরাও। সকলেরই একটাই দাবি আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চাই।