শেষ আপডেট: 9th April 2025 16:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সকাল থেকে চাকরিহারাদের বিক্ষোভ ঘিরে রণক্ষেত্র শহর কলকাতার কসবা এলাকা। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিবাদী শিক্ষকদের লাথি মারে পুলিশ, শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এর পরে পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায়, লাঠি চার্জ করতে হয় পুলিশকে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা জানালেন, লাঠি চার্জ অনভিপ্রেত, তবে পুরো ফুটেজ দেখা দরকার। একতরফা কোনও ছবি দেখে পরিস্থিতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মনোজ ভার্মা বলেন, 'আমাদের ছ'জন আহত হয়েছেন। একজনের আঘাত গুরুতর। পুলিশ যখন আক্রান্ত হয়েছে, তখনই পুলিশ বাধ্য হয়ে কিছু পদক্ষেপ করেছে।'
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, 'পুরো ফুটেজ আমরা দেখছি। লাথি মারার যে ছবি দেখানো হচ্ছে, সেটা একটা অংশ। পুরোটা নয়। যে ছবি দেখানো হচ্ছে সেটা অবশ্যই কাম্য নয়, তবে পুলিশ এমন অ্যাকশন কেন নিল, সেটাও দেখতে হবে। যে পুলিশকর্তারা ফিল্ডে রয়েছেন, আমরা তাঁদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। তবে আবারও বলছি, যে ছবি দেখা গিয়েছে সেটা কোনওমতেই কাম্য নয়।'
শুধু তাই নয়, সিপি আরও বলেন, 'যদি এই ধরনের বিক্ষোভ-প্রতিবাদের কথা স্থানীয় পুলিশকে আগে থেকে জানানো হয়, তাহলে পুলিশ নিশ্চয় সহযোগিতা করবে। কসবার ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে আগে থেকে কোনও তথ্য ছিল না।'
দেখুন কলকাতা পুলিশের পোস্ট করা ভিডিও।
It is clarified that outside the Kasba DI Office, an unruly mob launched an unprovoked and violent attack on police personnel, including women police. Four male and two female police personnel sustained injuries and are currently undergoing treatment. Police were compelled to use… pic.twitter.com/AC67ylqk9j
— Kolkata Police (@KolkataPolice) April 9, 2025
আজ সকালে খবর আসে, কসবা ডিআই অফিসের সামনে চাকরিহারা, বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়েছে। এর পরে লাঠিচার্জও করে পুলিশ। অসুস্থ হয়ে পড়েন একাধিক শিক্ষক। পরে পুলিশি বক্তব্যে দাবি করা হল, প্রথমে আক্রমণের মুখে পড়ে পুলিশই। তার পরেই 'আত্মরক্ষার্থে' গোলমাল নিয়ন্ত্রণ করে তারা।
এই নিয়ে বুধবার দিনভর নিন্দার ঝড় ঘনিয়েছে নানা মহলে। দুপুর ১:২০ নাগাদ রাজ্যের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম রাজ্যের সমস্ত এসপি-কে নির্দেশ দেন, রাজ্যের যে সমস্ত ডিআই অফিসের সামনে চাকরিহারা শিক্ষকরা গিয়ে আন্দোলন করছেন, বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদের গায়ে কোনওরকম হাত তোলা যাবে না। শান্তির পথে এবং আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টি সামাল দিতে হবে।
গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হওয়ার পরে সোমবার নেতাজি ইনডোরে চাকরিহারাদের সভায় যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চাকরিহারাদের একটা বড় অংশ সেই আশ্বাসে ভরসা করতে পারেননি। ফলে বাড়তে থাকে বিক্ষোভ।
এর পরেই বুধবার সকাল থেকে জেলায় জেলায় বিক্ষোভে নামেন তাঁরা। ঘেরাও করে ডিআই অফিস। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন।
এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ী করছেন চাকরিহারারা। তাঁদের সাফ বক্তব্য, শাসকদলের একাংশ নেতা চাকরি বিক্রি করল। সে কারণেই সরকার যোগ্য ও অযোগ্য বাছাই করল না, যার খেসারত দিতে হল তাঁদের। পুলিশের লাঠিচার্জ নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘পুলিশ দিয়ে মুখ বন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে।’ এর প্রতিবাদে আরও বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।