ফাইল চিত্র
শেষ আপডেট: 11 December 2024 16:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট থেকে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। তদন্তে গাফিলতির কারণে একাধিকবার হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়েছে রাজ্য পুলিশ। আর এবার ভুল রিপোর্ট দেওয়ার জন্য খোদ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা তথা সিআইডির ভূমিকায় চূড়ান্ত অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। একটি খুনের মামলায় 'অবিবেচক' রিপোর্ট দেওয়ায় সিআইডির হোমিসাইড শাখার আইসি-র বিরুদ্ধে ডিআইজি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
ঘটনাটি ২০১৫ সালের। ওই বছর ৪ মে নদিয়ার কালীগঞ্জে এক ব্যক্তি খুন হন। ঘটনার আগের দিন স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ হয়। ঘটনার দিন নওদা ও ছুটিপুর এলাকা থেকে প্রায় ৫০ জন মামলাকারী রিঙ্কু হাজরার বাড়িতে চড়াও হয়। প্রাণের ভয়ে রিঙ্কু বাচ্চাদের নিয়ে পালিয়ে যেতে পারলেও ওই উন্মত্ত জনতার হাতে পড়ে যায় রিঙ্কুর স্বামী শান্তনু হাজরা। তাঁকে সেখানেই খুন করা হয়। কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর ঘটনার গুরুত্ব বুঝে সিআইডির কাছে তদন্তভার যায়। সিআইডি তদন্তে নেমে মোট ৪৩ জনকে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে। ওই বছর জুলাই মাসে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে চার্জশিট জমা পড়ে। অভিযুক্তদের মধ্যে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে নদিয়া দায়রা আদালতের বিচারক সকলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেন। কিন্তু বাকি ২৩ জন অভিযুক্তকে এখনও ধরা যায়নি।
এই ঘটনায় পরবর্তীতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রিঙ্কু। সিআইডির হোমিসাইড শাখার কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। এদিন হোমিসাইড শাখার আইসি কৌশিক বসাকের তরফে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। দেখা যায় ওই ২৩ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। যা দেখেই বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, এই সব অফিসারদের দিয়ে সিআইডি চলছে? চার্জশিট দেওয়া হয়ে গিয়েছে। নিম্ন আদালত সাজা ঘোষণা করে দিয়েছে অথচ ওই ২৩ জনকে ঘোষিত অপরাধী (প্রক্লেমড অফেন্ডার) ঘোষণা না করে 'পলাতক' দেখানো হচ্ছে। বিচারপতি বলেন, 'এই পদে বসে ওই অফিসার কীভাবে এই রিপোর্ট দিতে পারেন?' এরপরই ওই রিপোর্টকে কেন্দ্র করে ডিআইজি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি।
২ জানুয়ারি মনামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন ডিআইজিকে সিআইডিকে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।