শেষ আপডেট: 11th September 2024 00:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লালবাজারের পুনরাবৃত্তি স্বাস্থ্যভবনে। সহপাঠীর বিচারের দাবিতে আরও একটা রাত জাগছেন আন্দোলনরত চিকিৎসক পড়ুয়ারা। গানে-স্লোগানে 'জাস্টিস ফর আরজি করের' দাবিতে সুর চড়াচ্ছেন তাঁরা।
রাত বাড়তেই সেখানে ভিড় বাড়ছে সাধারণ মানুষের। সল্টলেকের যে এলাকায় স্বাস্থ্যভবন, সেখানকার অনেক বাসিন্দাকে দেখা গেল, আন্দোলরত পড়ুয়াদের জন্য খাবার নিয়ে আসতে। স্থানীয়দের সেই দলে দেখা মিলল পঞ্চম শ্রেণির এক খুদেকেও। মায়ের সঙ্গে খাবার দিতে এসেছে সেও।
অন্যদিকে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সমর্থন জানাতে এদিন সন্ধেয় স্বাস্থ্যভবনের সামনে আসেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের তরফে সৌম্যদীপ রায় বলেন, "স্বাস্থ্যভবনের অদূরেই রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। ওরা আমাদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে এগিয়ে এসেছেন। বলেছেন, আমরা চাইলে ওই ক্যাম্পাসের শৌচালয় ব্যবহার করতে পারি, প্রয়োজনে সেখানে বিশ্রামও নিতে পারি।"
সৌম্যদীপ বলেন, আমাদের আন্দোলনের চাপে লালবাজারে পুলিশ বাধ্য হয়েছিল গার্ডরেল সরাতে। পুলিশ কমিশনারের হাতে তাঁরই পদত্যাগ পত্র দিয়ে এসেছিলাম। এক্ষেত্রেও আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।"
সোমবার আরজি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে হবে। নইলে তাঁদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার চাইলে ব্যবস্থা নিতেই পারবে। এরপরই পাঁচ দফা দাবিতে এদিন স্বাস্থ্যভবন অভিযানে নামেন আন্দোলরত চিকিৎসকরা।
সন্ধেয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের ইমেল বার্তা পাঠান স্বাস্থ্য দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নারায়ণ স্বরূপ নিগম। তিনি ইমেল বার্তায় ডাক্তারদের জানান, সরকারের শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য তাঁদের দশ জন প্রতিনিধি মঙ্গলবার রাতেই নবান্নে আসতে পারেন। স্বাস্থ্য সচিবের পাঠানো ই-মেল বার্তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, যেভাবে তাঁদের ডাকা হয়েছে তা অত্যন্ত অপমানজনক। দাবি না মানা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান বিক্ষোভ চলবে।
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলি হল- এক, ধর্ষণ-খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সমস্ত দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোরশাস্তির ব্যবস্থা, অপরাধের উদ্দেশ্য সামনে আনা। দুই, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িতদের চিহ্নিত করা। তিন, কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলের ইস্তফা। চার, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা এবং পাঁচ, রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভয়মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুনিশ্চিত করা। এদিন তার সঙ্গে স্বাস্থ্য কর্তাদের পদত্যাগের দাবিও জুড়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেই দাবিতেই চলছে আন্দোলন।