শেষ আপডেট: 10th March 2025 19:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন ইন্দ্রানুজ রায় (Indranuj Roy) নামের এক ছাত্র। তারপর থেকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সোমবার তাঁকে ছাড়া হল হাসপাতাল থেকে। অভিযোগ ছিল, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় ইন্দ্রানুজ আহত হয়েছিলেন। তাঁর পায়ে, চোখে গুরুতর চোট লাগে।
শাসক দল তৃণমূল অবশ্য মানতে রাজি নয় যে, ব্রাত্য বসুর গাড়ির ধাক্কায় ইন্দ্রানুজ আহত হয়েছিলেন। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন ইন্দ্রানুজের বাবা। বলেছিলেন, এক্স-রে রিপোর্টে যা আসার এসেছে। তিনি কোনও রাজনৈতিক তরজায় যেতে চান না। তাঁর বক্তব্য ছিল, 'যা ঘটছে তা সবাই দেখতে পেয়েছেন। আমাকে আর আলাদা করে বলতে হবে না।' প্রায় ১০ দিন হাসপাতালে থাকার পর সোমবার ছাড়া পেলেন সেই আহত ছাত্র।
এখন কেমন আছেন ইন্দ্রানুজ? সংবাদমাধ্যমে তাঁর বাবা জানান, ছেলে আপাতত স্থিতিশীল তবে তাঁকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলেছেন চিকিৎসকরা। চোটের জায়গাগুলি নিয়মিত ড্রেসিং করতে হবে। অন্তত ২ সপ্তাহ বিশ্রামের পর আবার চেক-আপ করাতে হবে তাঁকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত জানিয়েছিলেন, আহত ছাত্রের চিকিৎসার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেবে। ইন্দ্রানুজের বাবা জানিয়েছেন, হাসপাতালের সব বিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই পাঠানো হবে। তিনি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন এই সাহায্যের জন্য।
যাদবপুরের ঘটনার ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও একটাই প্রশ্ন রয়ে গেছে। আদৌ 'ধাক্কা'র অভিযোগ কতটা ঠিক, ইন্দ্রানুজ কি সত্যিই শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির তলায় পড়েছিলেন? সবটা পরিষ্কার করে বুঝে নিতে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির নমুনা পরীক্ষা করে দেখবে পুলিশ, এমনটাই সূত্রের খবর। কোথায় ধাক্কা লেগেছে, কীভাবে ধাক্কা লেগেছে, কী কী ক্ষতি হয়েছে, সেই সব উত্তর পেতেই শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ফরেন্সিক পরীক্ষা করে দেখবে পুলিশ। ধাক্কার পাশাপাশি, কীভাবে গাড়ির কাঁচ ভেঙেছে, তাও খতিয়ে দেখা হবে এই ফরেন্সিক পরীক্ষার মাধ্যমে।
এদিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি গেলেও পুরোপুরি চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না আহত ছাত্র ইন্দ্রানুজ। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তার মধ্যে একটিতে অভিযোগ করা হয়েছে, এই ছাত্র-সহ আরও একাধিক পড়ুয়া ব্রাত্য বসুকে মারধর, মন্ত্রীর পথ আটকানো, ঘড়ি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। প্রতিবাদ করলে মহিলা শিক্ষকদের শ্লীলতাহানি করেছেন। এখানেই শেষ নয়, স্টাফ কোয়ার্টার ভাঙচুর ও আগুন জ্বালানোর অভিযোগ রয়েছে ইন্দ্রানুজের বিরুদ্ধে। এছাড়াও তিন হাজার টাকা, ঘড়ি ও সোনার চেন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।