Date : 24th May, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
অগ্নিবীরকে বাঁচাতে গিয়ে নদীতে ঝাঁপ, সিকিমে মৃত্যু ৬ মাস আগে সেনায় যোগ দেওয়া অফিসারেরHarvard University: বিদেশি পড়ুয়া ভর্তিতে বাধা নয়! ট্রাম্প সরকারের নির্দেশে স্থগিতাদেশ 'সুপ্রিম কোর্ট প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রিক হয়ে গেছে,' অবসরের দিন মন্তব্য বিচারপতি এএস ওকার মমতার পাল্টা শুভেন্দু! মুর্শিদাবাদ নিয়ে বিশেষ অধিবেশনের দাবি বিরোধী দলনেতারলোকের ভাব-ভঙ্গি দেখে বুঝতাম আমার পত্রিকা কেউ কিনবে নাকলকাতাকে জঞ্জাল মুক্ত করতে পুরসভার বড় উদ্যোগ! চালু হচ্ছে বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরপূর্ণমের ঘরে ফেরা কেক কেটে উদযাপন করবে পরিবারবাগানে আপেল ফলিয়ে তাক লাগালেন বেলডাঙার শিক্ষকজাপানের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর স্পিকারকে বাংলায় আসার আমন্ত্রণ জানালেন অভিষেকট্রাম্প সরকারের পদক্ষেপ বেআইনি এবং অযৌক্তিক, আদালতে গেল হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ
Pahalgam Terror Attack

‘সেনা টহল দিচ্ছিল, তখনও বুঝিনি যে...’ কাশ্মীর থেকে ফিরে কলম ধরলেন কলকাতার ব্যাঙ্ককর্মী 

শ্রীনগরে পা দিতেই দেখি সব জায়গায় সেনা টহল দিচ্ছে। কাশ্মীরে এই দৃশ্য অস্বাভাবিক নয়। তাই খুব একটা অবাক হইনি। আমাদের ড্রাইভার দাদা এক একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিলেন, আর দেখাচ্ছিলেন এই খানে হামলা হয়েছিল, ওইখানে অতজন মারা গিয়েছিল।

 ‘সেনা টহল দিচ্ছিল, তখনও বুঝিনি যে...’ কাশ্মীর থেকে ফিরে কলম ধরলেন কলকাতার ব্যাঙ্ককর্মী 

Jammu Kashmir Pahalgam Terror Attack

শেষ আপডেট: 23 April 2025 11:32

দেবজ্যোতি চক্রবর্তী

 
মধ্যবিত্ত বাঙালির চাহিদা বড় কম। টাকা জমিয়ে দীঘা, পুরি, দার্জিলিং আর স্বপ্নের ডেস্টিনেশন কাশ্মীর! ভূস্বর্গ-- হেভেন ইন আর্থ। সেই ভূস্বর্গ যে এভাবে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে, তা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে, গলা শুকিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত। আমি দেবজ্যোতি চক্রবর্তী, কলকাতার ব্যাঙ্ককর্মী। অফিসে ছুটি ম্যানেজ করে গত ১১ এপ্রিল বাবা-মা স্ত্রী সবাইকে নিয়ে চলে গিয়েছিলাম কাশ্মীর। কী আনন্দ আমাদের!
 
শ্রীনগরে পা দিতেই দেখি সব জায়গায় সেনা টহল দিচ্ছে। কাশ্মীরে এই দৃশ্য অস্বাভাবিক নয়। তাই খুব একটা অবাক হইনি। আমাদের ড্রাইভার দাদা এক একটা জায়গায় নিয়ে যাচ্ছিলেন, আর দেখাচ্ছিলেন এই খানে হামলা হয়েছিল, ওইখানে অতজন মারা গিয়েছিল। বুক যে কাঁপেনি তা নয়, কিন্তু কাশ্মীর এত সুন্দরী, নিজের মায়াজালে কেমন যেন বেঁধে ফেলেছিল আমাদের ওই কয়েক দিনে। চারিদিক সবুজ, টিউলিপের সুবাস আচ্ছন্ন করে রেখেছিল মন-প্রাণ। তখনও কি জানতাম মাত্র কয়েক দিনে পরেই রক্তে ভাসবে কাশ্মীরের বরফ?

আমরা বাড়ি ফিরি গত রবিবার। ভাগ্যিস! আজ যখন টিভিতে জায়গাগুলো দেখছিলাম গা-হাত পা কাঁপছিল। এই জায়গায় তো আমরাও গিয়েছিলাম এই কয়েকদিন আগেই। বিপদের গন্ধ নাকে আসেনি একবারও। খোলা বাতাসে শ্বাস নিয়েছি। বারুদের গন্ধ সে বাতাসে মিশে ছিল না। স্থানীয়দের সঙ্গেও খোশমেজাজে আড্ডা দিয়েছি মন খুলে। দেখলাম, পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় ঘটনাটি ঘটেছে। বৈসরণ খানিক উঁচুতে। বয়স্ক বাবা-মা থাকায় সেখানে যাইনি আমরা। ভাগ্যিস! আমি তো কবিগুরুর 'বীরপুরুষ' নই। 'খোকা' সঙ্গে থাকলেও দুর্দশা আটকানোর সাধ্যি আমার নেই! ওই মানুষগুলোর পরিবারের কথা ভেবে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। শিউরে উঠে ভাবছি, মাত্র দুই দিনের ব্যবধান! 

আমার সন্তান হয়নি এখনও। ইচ্ছে ছিল সন্তানের হাত ধরে বরফ মাখব গায়ে, পাইন গাছের সারি আর ডাল লেকের স্বচ্ছ জলে খুঁজে নেব প্রকৃতির আদর। এই ঘটনার পর ভয় পাচ্ছি খুব। না, প্রিয়জনের প্রাণ বাজি রাখতে পারব না আমি। কাশ্মীর না হয় ও গুগলেই চিনুক। দুপুর থেকেই মনে পড়ে যাচ্ছে, আমাদের ড্রাইভার দাদার কথা, মনে পড়ছে রেস্তোরার ওই ছেলেটার কথা...আমাদের মতো ওরাও সেখানকার স্থানীয় মানুষ। জানি না আজকের পর ওরা কেমন আছেন! যে জায়গায় পর্যটনই আয়ের মূল উৎস সেখানে জঙ্গি হামলা তো সাধারণের রুজিতেও প্রভাব ফেলবে। এ মৃত্যু উপত্যকা তাঁদেরও তো 'দেশ' নয়! 

(লেখক সদ্য কাশ্মীর থেকে ঘুরে আসা কলকাতার ব্যাঙ্ককর্মী)

অনুলিখন: বিহঙ্গী বিশ্বাস


ভিডিও স্টোরি