অসুস্থ উপাচার্য, (ডান দিকে) ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস
শেষ আপডেট: 6th March 2025 14:40
প্রীতি সাহা
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত (Bhaskar Gupta) বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। গত শনিবার যে ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘটেছিল (Jadavpur University) তার দায় উপাচার্যের ওপর চাপিয়েই তাঁকে বুধবার বিকেল ৪টের ডেডলাইন দিয়েছিলেন ছাত্ররা। দাবি ছিল, তিনি বৈঠক করুন। কিন্তু অসুস্থ থাকার কারণে তার কিছুই হয়নি। এখন কেমন আছেন ভাস্কর গুপ্ত, তা জানতেই তাঁর চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের (Dr. Arindam Biswas) সঙ্গে কথা বলেছিল দ্য ওয়াল। কী জানালেন তিনি?
গত শনিবার থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করছিলেন। তবে মঙ্গলবার সকালে তাঁর রক্তচাপ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে ১৭০-৯০ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। চিকিৎসকদের আশঙ্কা ছিল, এতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে। তাই তাঁকে বাইপাসের ধারের এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উপাচার্যের শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর চিকিৎসক দ্য ওয়াল-কে জানান, ''আগের তুলনায় কিছুটা ভাল হলেও পুরো ভাল নেই। ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে তাঁর। আপাতত স্থিতিশীল বলা যায়। রক্তচাপ আগের থেকে কমলেও নীচেরটা ৯০-এর আশেপাশেই রয়েছে।''
চিকিৎসক এও জানিয়েছেন, যে কোনও কারণেই হোক, চিন্তার জন্য ঘুম ভাল হচ্ছে না ভাস্কর বাবুর। ২০১৫ সালে তাঁর বড় স্ট্রোক হয়েছিল। তাই এই বিষয়টি ভাবার রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে ওষুধ চলছে এবং চিন্তা যাতে উনি কম করেন, তার চেষ্টা করছেন তাঁরা। স্বস্তির বিষয়, এমআরআই-তে খারাপ কিছু আসেনি। আর বাকি যে পরীক্ষাগুলো করা হয়েছিল তাও খারাপ নয়। এমনটাই জানিয়েছেন ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস। কিন্তু রক্তচাপ যতক্ষণ না কমছে ততক্ষণ চিন্তা থেকেই যাবে বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি কারণ স্ট্রোকের একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়।
ঠিক কতদিনে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেন উপাচার্য? চিকিৎসকের কথায়, ''আমরা আস্তে আস্তে প্রেশার কমাই। কম করে ১০ থেকে ১৪ দিন তো সময় লাগবে তাঁকে সম্পূর্ণ সুস্থ করতে।'' কিন্তু রক্তচাপ স্বাভাবিক না হওয়ার কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলেননি তিনি। শুধু জানান, যা ঘটেছে বাঁ ঘটছে তার জন্য ক্রমাগত চিন্তা করা একটা ফ্যাক্টর। আরও নানা কারণ থাকতে পারে। তবে মূলত ওই কারণেই কিনা, তা বলা যায় না। তাঁর একটাই লক্ষ্য, রোগী ভাস্কর গুপ্তকে সুস্থ করে তোলা। বাকি কারা কী বলছেন, কোন স্লোগান উঠছে, তাতে তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
যাদবপুরের ঘটনা যে বড় প্রভাব তাঁর শরীরের ওপর ফেলেছে তা কার্যত স্পষ্ট। এক্ষেত্রে তাঁকে টিভি থেকে, মোবাইল থেকে, এই বিষয় নিয়ে লোকের সঙ্গে আলোচনার থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস। প্রসঙ্গত, এর আগে সোমবার তিনি দ্য ওয়াল-কে জানিয়েছিলেন, ভাস্করবাবুর একটা বুক ধড়ফড়ের ব্যাপার হচ্ছিল। চার-পাঁচ বছর আগে ওঁর একটা স্ট্রোক হয়। যাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় থ্যালামিক হেমারেজ, অর্থাৎ যে ধমনিগুলো থ্যালামাসে রক্ত সাপ্লাই করছ, সেগুলো ফেটে গিয়ে রক্ত বেরোয় এবং ব্রেইন হেমারেজ হয়। সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে এসেছেন ভাস্করবাবু। এই অবস্থায় রোগীর আরও খারাপ হতে পারত।
এই মুহূর্তে বেশি কাউকে তাঁর সঙ্গে দেখাও করতে দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা। বেশি কথা বলতেও উপাচার্যকে বারণ করা হয়েছে। আর বললেও তিনি যাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে কথা না বলেন, সেই অনুরোধ করা হয়েছে।