শেষ আপডেট: 22nd September 2024 10:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টালিগঞ্জের কেশসজ্জা শিল্পী তনুশ্রী দাসের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গিল্ডের ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হরিদেবপুর থানায় দায়ের হল অভিযোগ। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার রাতে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। সোশ্যাল মাধ্যমে তনুশ্রীর আত্মহত্যার চেষ্টার খবর জানিয়ে তিনি লেখেন, ''আমার হাত ধরেই ওঁর ইন্ডাস্ট্রিতে আসা। কর্মক্ষেত্রে হেনস্থা কোন পর্যায়ে যেতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ এই মুহূর্তে আমার চোখের সামনে। আর এর শেষ দেখে ছাড়ব, কথা দিলাম।'' ওই শিল্পীকে দেখতে হাসপাতালে গেছেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় সহ অনেকেই।
ওই শিল্পীকে দেখতে রাতেই হাসপাতালে পৌঁছন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় সহ অনেকেই। রবিবার সকালে এ বিষয়ে সরব হয়েছেন অভিনেত্রী-পরিচালক সুদেষ্ণা রায়ও। তিনি বলেন, "গিল্ডের এই সিদ্ধান্ত বেআইনি, এটা মেনে নেওয়া যায় না।"
সূত্রের খবর, ওই কেশসজ্জা শিল্পী সিলেকশনের পরিবর্তে ইলেকশনের দাবি জানিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেকারণে তাঁকে প্রথমে সাসপেন্ড পরে একঘরে করে দেওয়া হয়। এমনকী পরে এও বলা হয়, সে নিজে থেকে কোনও কাজ ধরতে পারবে না। শুধু মাত্র। অভিযোগ, শনিবার তিনি একটি কাজ ধরার পরেও সেটি করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই তনুশ্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে দাবি নিকটজনেদের।
আত্মহত্যার চেষ্টার আগে তনুশ্রী দাস নামে ওই শিল্পী সহকর্মীদের উদ্দেশে একটি অডিও বার্তা দেন। ভাইরাল ওই অডিও বার্তায় শিল্পীকে বলতে শোনা যায়, ''আমি অন্যায় করছিলাম তাই আমাকে ৩ মাস সাসপেন্ড করেছিল। আমি মেনে নিয়েছি। কিন্তু এই ৩ মাসে আমার অনেক দেনা হয়ে গেছে। আমার বর অসুস্থ। মেয়ের পড়াশোনা আছে। পরে আমি বাইরে কাজ ধরেছিলাম কিন্তু আমাকে কাজ করতে দেয়নি। সেক্রেটারি আমাকে দুটো কাজ করতে দেয়নি... আমার দেওয়ালে পিঠ থেকে গেছে। কাল কাজ শুরু ছিল এক জায়গায়, কিন্তু ফোন করে জানানো হয়েছে, আমি কাজ করতে পারব না। গিল্ড থেকে যা দেওয়া হবে তাই করতে পারব। আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় নেই।''
প্রসঙ্গত, শনিবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়েছে 'ওয়েমেন ফোরাম ফর স্ক্রিন ওয়ার্কারস'। তাঁদের দাবি, কাজ করতে এসে বহু অভিনেতা, ক্রু সদস্য, টেকনিশিয়ান অনেক সময়ই হেনস্থার শিকার হন। কিন্তু তাঁদের অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না বেশিরভাগ সময়। তাই এসব অভিযোগের তদন্ত করতে স্বাধীন একটি কমিটি গঠন করুক সরকার। মূলত আরজি করের ঘটনার পরই এমন একটি পদক্ষেপ নেওয়া আরও জরুরি হয়ে উঠেছে বলেই মনে করছে তাঁরা।
সংগঠন চাইছে, যে কমিটি গঠন করা হবে সেটি যৌন হেনস্থা তো বটেই, লিঙ্গবৈষম্যের অভিযোগ থেকে থেকে শুরু করে অসুরক্ষিত কাজের পরিবেশের বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি এই চিঠির কপি তাঁরা পাঠিয়েছে রাজ্যের নারী এবং শিশু সুরক্ষা মন্ত্রক, শ্রম মন্ত্রক, রাজ্য মহিলা কমিশন এবং তথ্য সংস্কৃতি দফতরেও। তার মধ্যেই সামনে এল কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার গুরুতর অভিযোগ।