শেষ আপডেট: 11th November 2024 15:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আত্মহত্যা রুখতে কলকাতার বিভিন্ন স্টেশনে গার্ডরেল বসানোর সিদ্ধান্ত নিল মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। প্রায়শই লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার খবর উঠে আসে। যার জেরে যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে উঠছিল প্রশ্ন। এবার সেই বিতর্ককেই ধামাচাপা দিতে বিশেষ উদ্যোগ। কর্তৃপক্ষের তরফে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও আদৌ আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে কিনা তা নিয়েই শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
ইতিমধ্যে কালীঘাট স্টেশনে বসানো হয়েছে গার্ডরেল। যাত্রীদের স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁরা যেন গার্ডরেলবিহীন ফাঁকা অংশগুলিই মেট্রোতে ওঠার জন্য ব্যবহার করেন। মেট্রোর তরফে এমন উদ্যোগ নেওয়া হলেও আদৌ কোন প্রভাব পড়বে?
যাত্রীদের মতে, এভাবে আত্মহত্যা রোখা একেবারেই সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে প্রত্যেক স্টেশনে বিশেষ দায়িত্ব নিতে হবে ডিউটিতে থাকা সিআরপিএফ জওয়ানদের। নাহলে মেট্রো আসার আগে যদি কেউ ঝাঁপ দেয় সেক্ষেত্রে গার্ডরেল কোনওভাবেই ‘রক্ষাকবচ’ হতে পারে না।
বর্তমানে কলকাতায় চলা রেকগুলি মূলত তিনটি সংস্থা তৈরি করে। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন মেট্রোর দরজাগুলির মধ্যেকার দূরত্বও সমান নয়। সেক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্ম পুরোটা ফাঁকা থাকলে দরজার মধ্যেকার এই দূরত্বের পার্থক্যের কারণে বিশেষ সমস্যা হয় না। কিন্তু, প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট দূরত্বে গার্ডরেল বসানোয় অনেক সময় স্বয়ংক্রিয় এক বা একাধিক দরজা সেই গার্ডরেলের সামনে পড়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে যাত্রীদের ওঠানামা করতেই বিস্তর সমস্যা হচ্ছে বলে খবর।
অনেকেই মনে করছেন এতে দুর্ঘটনা কমানো তো দূর, উল্টে তা বাড়তে পারে। বিশেষ করে অফিস টাইমে দুর্ভোগ মারাত্মক বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। কলকাতা পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো রেলের প্রত্যেকটি স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের দু’ধারে রয়েছে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং ডোর। যা ট্রেনের কামরার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে এসে থামার পরই দরজা খোলে। ফলে কারও পক্ষেই সেই নিরাপত্তাবেষ্টনী টপকে লাইনে ঝাঁপ দেওয়া কার্যত অসম্ভব। কিন্তু গার্ডরেল দিলে জটিলতা বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ইতিমধ্যেই কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের একদিকের প্ল্যাটফর্মে ৩১টি গার্ডরেল বসানো হয়েছে বলে মেট্রো রেল সূত্রে খবর। আগামী দিনে বাকি স্টেশনগুলিতেও একই ব্যবস্থা করা হতে পারে। মেট্রো রেলের তরফে আরও জানানো হয়েছে, পুরোটাই পরীক্ষামূলকভাবে করা হচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধা খতিয়ে দেখেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মেট্রো স্টেশনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে এমন অভিযোগ উঠলেও বিশেষ কিছু করে ওঠা হয়নি। এবার গার্ডরেল লাগিয়ে বিষয়টা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও আদৌ তা কতখানি প্রাসঙ্গিক তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।