গ্রাফিক্স, দ্য ওয়াল।
শেষ আপডেট: 5 May 2025 18:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: "ওপরে ভগবান, তারপরেই আদালত। আমি তো সামান্য মেয়র, অনেক নীচে! মহামান্য আদালত যেটা ভাল মনে করবে সেটাই হবে, এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই!" বক্তা, ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। কলকাতার মহা নাগরিক।
গত মঙ্গলবার কলকাতার মেছুয়া বাজারের হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃ্ত্যুর পর বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সারপ্রাইজ ভিজিটে গিয়ে পার্কস্ট্রিটের জতুগৃহ হাতে নাতে ধরেন। এরপরই পার্কস্ট্রিটের ম্যাগমা হাউজের (Magma House) রুফটপ ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। সেই কাজও শুরু হয়।
এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে গড়িয়েছিল মামলা। ওই মামলায় সোমবার পুরসভার সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এরপরই শহরের রুফটপ (Roof Top Restaurant) রেস্টুরেন্ট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে একথা বলেন ফিরহাদ।
এ প্রসঙ্গে কলকাতা শহরের হুক্কা বারের প্রসঙ্গও টেনে আনেন কলকাতার মহানাগরিক। ফিরহাদের কথায়, "আমি একজন বাবা হিসেবে হুক্কা বার বন্ধ করতে চেয়েছিলাম। কারণ, এতে নব প্রজন্মের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু মহামান্য আদালত মনে করেছে, তাই চালু রয়েছে। এখানে তো আমার কিছু করার নেই।"
আদালত জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পরবর্তী শুনানির দিন পর্যন্ত ম্যাগমা হাউজের রুফটপ ভাঙা যাবে না।
এ ব্যাপারে ফিরহাদ বলেন, "ভাঙতে আমাদেরও ভাল লাগে না, আমরাও কারও ব্যবসায় হাত দিতে চায় না, কিন্তু উপায় না থাকলে কী হবে?" তিনি বলেন, "যেভাবে রুফটপ হোটেলগুলো গজিয়ে উঠেছে, সেখানে হাইড্রোলিক ল্যাডার (hydraulic ladder) লাগিয়ে রেসকিউ করা যায় না। কারণ, ওগুলো চারিদিক থেকে ঘেরা থাকে। এবার ওপরের আগুন নীচে নেমে গেলে কীভাবে রেসকিউ হবে?"
এ প্রসঙ্গে কলকাতার মহা নাগরিক এও বলেন, "আমি মনে করি যত গেস্ট হাউস, রেস্তরাঁ রয়েছে তার অডিট হওয়া দরকার, ফায়ার ডিপার্টমেন্টকে বলব, প্রত্যেকটির অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা দরকার, যাতে জতুগৃহ না হয়ে যায়।"
এ প্রসঙ্গে বাম আমলে স্টিফেন কোর্টে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে ফিরহাদ বলেন, "যদি ছাদে ওঠার কোলাপসিবল গেট খোলা থাকতো, তাহলে সবাই ছাদে উঠে যেত, ওভাবে সিঁড়িতে অতগুলো লোককে মারা যেতে হত না। হোটেলের নিয়ম হচ্ছে, আগে গেস্টদের রক্ষা করা, এরা তা না করে নিজেরা পালিয়ে গেল! যতক্ষণ কালো ধোঁয়া গিয়ে গ্রাস করল, ততক্ষণ জানল না, মারা গেল। এটা খুবই দুঃখজনক। কেউই চাইবে না পুনরায় এঘটনা ঘটুক।"
রুফটপ খোলা রাখলেও সমস্যা আছে। ফিরহাদ বলেন, "অনেকে সুইসাইড করতে পারে। প্রয়োজনে সেজন্য ঘেরার জালটা বড় করে দিতে হবে। মোট কথা, আমরা চাই মানুষ সচেতনভাবে এগিয়ে আসুক। কিন্তু একাংশ ব্যবসায়ী নোটিসের বিরুদ্ধে কোর্টে গেল, এবার আদালত ঠিক করুক, কী করবে।"