শেষ আপডেট: 2nd February 2025 18:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লেদার কমপ্লেক্সের শ্রমিক মৃত্যু ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ঘোষণা ফিরহাদ হাকিমের। তিন শ্রমিকের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মেয়র।
রবিবার কলকাতার লেদার কমপ্লেক্সের ভিতরে সেক্টর ৬ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অধীনে সাফাইয়ের কাজ চলছিল। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ট্যানারির বর্জ্য পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে এক সাফাইকর্মীকে নামানো হয়েছিল। দীর্ঘক্ষণ হয়ে গেলেও তিনি না ওঠায় তাঁর খোঁজে হাইড্রেনে নামেন আরও দু'জন। ওই তিনজনই তলিয়ে যান। ঘটনাটি ঘটে সকাল ৯টা নাগাদ।
তিন সাফাইকর্মীর নাম ফরজেম শেখ, হাসি শেখ এবং সুমন সর্দার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যে ম্যানহোলে তিন শ্রমিক তলিয়ে গিয়েছিলেন, সেটি প্রায় ১০ ফুট গভীর। পাশাপাশি, ম্যানহোল থেকে বিভিন্ন রাসায়নিকের তীব্র দুর্গন্ধ ভেসে আসছে। বিষাক্ত গ্যাসও থাকতে পারে বলে আশঙ্কা। তারই জেরে তিন সাফাইকর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালেও এই লেদার কমপ্লেক্সে তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। প্রায় একই রকমভাবে কাজে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল তাঁদের।
ম্যানহোল বা নিকাশি নালায় মানুষ নামিয়ে পরিষ্কারের ব্যবস্থাকে ২০১৩ সালে নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল সুপ্রিমকোর্ট। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল, ম্যানহোল সাফাই, মলমূত্র সাফাইয়ের মতো কাজে কোনও মানুষকে দিয়ে করানো যাবে না। এমনকী পরিস্থিতি বিশেষে কাউকে ম্যানহোলে নামাতে হলেও সংশ্লিষ্ট সাফাইকর্মীর জীবন এবং স্বাস্থ্যের সব রকমের নিরাপত্তাও দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
এমনকী কাউকে ম্যানহোলে নামানোর আগে নিশ্চিত হতে হবে সেখানে প্রাণঘাতী গ্যাস আছে কি না। নামানোর আগে সংশ্লিষ্ট কর্মীর মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিশেষ অ্যাপ্রনে ঢেকে রাখার কথাও বলা হয়েছিল। এক্ষেত্রে এসবের কোনও কিছুই মানা হয়নি বলে অভিযোগ।
তিন দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট আবার বড় নির্দেশ দিয়েছে। সাফ বলা হয়েছে কলকাতা-সহ ৬ রাজ্যে হাত দিয়ে ময়লা তোলা ও নর্দমা পরিষ্কারে ম্যানহোলে মানুষ নামা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তারপরেও এ ঘটনায় নতুন করে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এর আগে ২০২১ সালে কার্যত একই রকম একটি ঘটনা ঘটেছিল কলকাতায়। ওই বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি কুঁদঘাটে ম্যানহোলে নেমে ৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল একইভাবে। যা নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও হয়েছিল।