শেষ আপডেট: 17th January 2025 23:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এই দিনটার দিকে গোটা বাংলা তাকিয়ে। কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে গত বছর অগাস্ট মাসে যে নারকীয় ঘটনা ঘটেছিল তার রায়দান শনিবার। কলকাতা পুলিশের গ্রেফতার করা সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কেই মূল এবং একমাত্র দোষী হিসেবে দাবি করেছে সিবিআই। ইতিমধ্যে তাঁরা সঞ্জয়ের ফাঁসির আবেদনও করেছে। তাহলে শনিবার কি ফাঁসির আদেশই দেবে শিয়ালদহ আদালত?
২০২৪ সালের ৯ অগাস্টের পর কলকাতা তথা বাংলা সহ কার্যত গোটা দেশের চিত্রটাই বদলে যায়। পথে পথে নামতে শুরু করেন ডাক্তার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে হয় রাত দখলের মতো আন্দোলন। এছাড়া মিছিল, অবস্থান-বিক্ষোভ, নবান্ন অভিযান, কর্মবিরতি, আমরণ অনশন পর্যন্ত দেখেছে সকলে। দুর্গাপুজোর পর জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন তুলে নেওয়ায় বলা যায় আন্দোলনে কিছুটা ভাঁটা পড়েছিল। তবে তা থিতিয়ে যায়নি কোনও দিন।
কলকাতা হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টেও আরজি কর মামলার শুনানি হয়েছে। তবে যে দিনটার আশায় মানুষ ছিল অবশেষে সেই দিন চলে এল। ১১ নভেম্বর শিয়ালদহ আদালতে শুরু হয় এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া। তার ১ মাস ৭ দিনের মাথায় ১৮ জানুয়ারি আরজি করের চিকিৎসক ধর্ষণ-খুন মামলার রায়দান।
যদিও আরজি কর কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছে। কলকাতা পুলিশ ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল। তার সপ্তাহখানেক পরই মামলার তদন্তভার পায় সিবিআই। যদিও তারা সঞ্জয় ছাড়া আর কাউকেই গ্রেফতার করেনি। এমনকী এমনও দাবি করেনি যে এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত রয়েছে। কিন্তু নির্যাতিতার বাবা-মা থেকে শুরু করে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার, সাধারণ মানুষের একাংশ মনে করেন, এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত।
সিবিআই তদন্ত নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিকবার উষ্মা প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। দাবি, সিবিআই একমাত্র সঞ্জয় রায়কেই দোষী প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। আদতে তাঁরা কোনও কাজ করেনি। তাঁদের স্পষ্ট কথা, সঞ্জয় দোষী তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এই ঘটনায় আরও অনেকে যুক্ত আছেন, যাদের ধরা হচ্ছে না! বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের দাবি করে নির্যাতিতার বাবা-মার আশঙ্কা, সিবিআইও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে।
তাঁদের এও আশঙ্কা, তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই যেন একটা অদৃশ্য আদেশ কাজ করছে নেপথ্যে। তাঁদের আশঙ্কা, তার জন্যই সব তথ্য-প্রমাণ লোপাট হয়েছে। এখন রায়দানের পর তাঁদের কী প্রতিক্রিয়া হয়, সেটাই দেখার। তাঁদের মতো গোটা দেশ তাকিয়ে শিয়ালদহ আদালতের দিকে।