শেষ আপডেট: 10th September 2024 14:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোমবার সুপ্রিম পষ্টাপষ্টিই জানিয়ে দিয়েছিল, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি থামিয়ে কাজে ফিরতে হবে। ৫টা পর কেউ কর্মবিরতি পালন করলে তাঁর বিরুদ্ধে সরকার শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেই পারে। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের সেই নির্দেশকে পরোয়া না করে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যভবন অভিযানে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। লালবাজার অভিযানে তাঁদের হাতে ছিল কৃত্রিম মেরুদণ্ড। মঙ্গলবার তাঁদের হাতে ধরা রয়েছে কৃত্রিম মগজ। অর্থাৎ বার্তা এই যে স্বাস্থ্য পরিষেবার যে মগজ তথা স্বাস্থ্যভবন সেখানেই সাফাই অভিযান চালানো। তিন স্বাস্থ্য কর্তার পদত্যাগ সহ পাঁচ দফা দাবিও তুলেছেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য ভবন অভিযান দীর্ঘায়িত করতে পারেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে টানা চার থেকে পাঁচ দিন অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে পারেন চিকিৎসকরা। সেই জন্য বায়ো টয়লেটের বন্দোবস্তও করা হচ্ছে বলে খবর।
জুনিয়র ডাক্তারদের এই কৌশল তাৎপর্যপূর্ণ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সরকারের আশা ছিল, ক্রমশ এবার আন্দোলনের উত্তাপ কমবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ডাক্তারদের দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে বলেছিলেন, এবার উৎসবে ফিরুন।
কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন দীর্ঘায়িত করে বোঝাতে চাইছেন, বিচার না পাওয়া পর্যন্ত উৎসবে ফেরার প্রশ্নই নেই। আন্দোলনের উত্তাপ যাতে জিইয়ে থাকে সেই কারণেই টানা অবস্থানের কৌশল নেওয়া হতে পারে।
জুনিয়র ডাক্তাররা যে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে তা হল, আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে। তাদের অপরাধের উদ্দেশ্য কী ছিল তা জানাতে হবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। দুই, তথ্য ও প্রমাণ লোপাটের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। তিন, কলকাতা পুলিশের কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে ইস্তফা দিতে হবে। চার, রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল আর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। পাঁচ, সব হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে ভয়মুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুনিশ্চিত কায়েম করতে হবে।
ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সরকার কী কী পদক্ষেপ করতে চাইছে তা সোমবার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, ৭ দিনের মধ্যে তা বাস্তবায়িত করতে হবে এবং জেলা শাসকদের সেই কাজের উপর নজরদারি রাখতে হবে। কিন্তু তার পরেও জুনিয়র ডাক্তাররা যে রকম একরোখা পদক্ষেপ করছেন, তাতে চিন্তায় পড়েছে সরকার।
নবান্নের একটি সূত্রের মতে, বিনা অনুমতিতে রাস্তা আটকে মিছিল মিটিংয়ে এবার আপত্তি করতে পারে সরকার। সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি ঠিকই। কিন্তু অচলাবস্থার পরিবেশ তৈরি করে রাখা বরদাস্ত করা হবে না।