শেষ আপডেট: 11th April 2025 15:22
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দিল্লির একটি খুনের ঘটনায় নাকের নথ চিনিয়ে দিল অভিযুক্তকে। ওই নথের সূত্র ধরে মৃতার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্ত্রীকে খুনের দায়ে আপাতত জেলে আছেন দিল্লির ব্যবসায়ী।
মূল ঘটনা কবেকার তা স্পষ্টভাবে না জানা গেলেও ১৫ মার্চ থেকে শুরু হয় তদন্ত। ওইদিন দিল্লির একটি ড্রেনে বিছানার চাদরে মোড়া এবং পাথর ও সিমেন্টের বস্তা দিয়ে বাঁধা একটি দেহ উদ্ধার হয়। মহিলার মৃতদেহ। তাঁরা নাকে একটি নথ পাওয়া যায়, প্রাথমিকভাবে ওইটুকু তথ্য নিয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। প্রথমে তো মৃতার পরিচয়ও জানতে পারেনি পুলিশ।
ওই নথ দোকানে দোকানে ঘুরে দেখিয়ে তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পারেন, দক্ষিণ দিল্লির একটি দোকান থেকে সেটি কেনা হয়েছিল। দোকানে পৌঁছে ওই নথের ডিটেলস পেতেই খোলসা হয় সবটা। পুলিশ রেকর্ড ঘেঁটে জানতে পারে, ওই নথ অনিল কুমার নামের এক ব্যক্তি কিনেছিলেন। পেশায় তিনি প্রপার্টি ডিলার, থাকেন গুরুগ্রামের একটি ফার্ম হাউসে। নথটির বিল ছিল তাঁর নামেই। পুলিশ জানতে পারে, মৃতা ওই মহিলা হলেন অনিল কুমারের স্ত্রী সীমানা সিংহ (৪৭)।
পুলিশ অনিল কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হয়। এবার পুলিশের তরফে যখন তাঁকে সীমানার সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করা হয়, অনিল জানান সীমানা ফোন ছাড়াই বৃন্দাবনে গিয়েছেন। এই উত্তরে পুলিশের সন্দেহ আরও বাড়ে। পুলিশ পৌঁছে যায় অনিল কুমারের দ্বারকা অফিসে, যেখানে একটি ডায়েরি থেকে তাঁরা সীমানা বাড়ির লোকের ফোন নম্বর খুঁজে পান। সীমানার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান সীমানার সঙ্গেও তাঁরাও যোগাযোগ করতে পারছেন না। সীমানার বোন ববিতা পুলিশকে জানান, তাঁরা যখন অনিল কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তখন তিনি জানান সীমানা জয়পুরে আছেন এবং কথা বলতে ইচ্ছুক নন। অনিল আশ্বস্ত করেন যে, সীমানার মনের অবস্থার উন্নতি হলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন।
এইরকম করেই বেশ কিছুদিন কেটে যায়। সীমানার পরিবার জানায়, তাঁরা পুলিশের কাছে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অনিল কুমারের আশ্বাসে পিছপা হন। অপেক্ষা করতে শুরু করেন।
এরপর ১লা এপ্রিল, পুলিশ সীমানার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাঁদের ডেকে নিয়ে যায় এক মহিলার মৃতদেহ শনাক্ত করতে। পরিবার নিশ্চিত হয় যে মৃতদেহটি সীমানারই। পরদিন সীমানার বড় ছেলে এসে মায়ের দেহ শনাক্ত করে। পরিবার খুনের দাবি অভিযোগ তোলে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও দেখা যায় সীমানাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। দ্বারকার যে বাড়িতে সীমানা ও অনিল থাকতেন, সেই বাড়ির চাবি ছিল শুধু দু’জনের কাছেই।
এই ঘটনায় অনিল কুমার এবং তাঁর দেহরক্ষীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। কী কারণে খুন তা খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকরা। সীমানার সন্তানদের সঙ্গেও কথা বলে কিনিরা করার চেষ্টা চলছে।