মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জুনিয়র ডাক্তার।
শেষ আপডেট: 11th September 2024 16:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের স্নায়ুর লড়াই পুরোদস্তুর শুরু হয়ে গেল। এখন বড় কৌতূহলের বিষয় হল, বুধবারই কি রফাসূত্র বেরোতে পারে? কোন কোন বিষয়ে তীব্র টানাপড়েনের শঙ্কা রয়েছে?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথমে জুনিয়র ডাক্তারদের আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই চিঠিতে কোথাএ বলা ছিল না, মুখ্যমন্ত্রীই আলোচনায় বসবেন। বরং শুধু এটুকু বলা ছিল যে নবান্নে সিনিয়র অফিসাররা আলোচনায় বসবেন। সেই কারণে জুনিয়র ডাক্তাররাও তাতে সাড়া দেননি। পরে মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য স্পষ্ট করে বলেন, যে মুখ্যমন্ত্রীই আলোচনায় বসতে চেয়েছেন।
এর পর বুধবার নবান্নে চিঠি পাঠিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়ে দেন, তাঁরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তাঁদের ৩০ জন প্রতিনিধিকে নবান্নে ডাকতে হবে। এবং বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে। এরই পাশাপাশি কলকাতার পুলিশ কমিশনার, স্বাস্থ্য সচিবের ইস্তফার দাবিতে অনড় থাকার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।
জুনিয়র ডাক্তাররা এ কথা জানানোর পর বুধবার সন্ধে ৬টায় তাঁদের নবান্নে ডেকেছেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। তবে সেই চিঠিতেও লেখা নেই যে মুখ্যমন্ত্রী ওই বৈঠকে থাকবেন। তা ছাড়া মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, ডাক্তারদের ১২ থেকে ১৫ জন বৈঠকে যোগ দিতে আসেন। তাৎপর্যপূর্ণ হল, বৈঠক লাইভ স্ট্রিমিং করার দাবি নবান্ন মেনে নিয়েছে কিনা তা স্পষ্ট করে লেখেননি মুখ্য সচিব।
মনোজ পন্থের সেই চিঠির পর ডাক্তাররা এখনও কিছু জানাননি। পর্যবেক্ষকদের মতে, আসলে জুনিয়র ডাক্তাররাও পরিণত রাজনীতিকদের মতই নবান্নের সঙ্গে জবর স্নায়ুর লড়াইয়ে নেমেছেন। মুখ্য সচিবের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে তাঁরা নবান্নে গেলেও কলকাতার পুলিশ কমিশনার ও স্বাস্থ্য সচিবের ইস্তফার দাবিতে অনড় থাকবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
আবার সরকার যে এই সব দাবি মানতে চাইবে না তার লক্ষণও পরিষ্কার। কারণ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, বিনীত গোয়েল ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। পুজোর আগে বিনীতকে সরানোর সমীচীন হবে না বলেও বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা ছাড়া স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম দক্ষ আমলাদের মধ্যে অন্যতম বলে বিবেচিত হন। দাবির মুখে পড়ে সরকার তাঁকেও সরাতে চাইবে কিনা সংশয় রয়েছে।
নবান্নের এক কর্তার কথায়, পুলিশ কমিশনার বা স্বাস্থ্য সচিবের ইস্তফার দাবির নেপথ্যে বাম রাজনীতির ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে শাসক শিবির। তাই সেই চাপের মুখে নতি স্বীকার না করার অবস্থান নিয়ে রেখেছে নবান্ন। শেষমেশ তা ধরে রাখতে পারবে কিনা দেখতে হবে। তবে হ্যাঁ, ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা ও হাসপাতালে ভয়মুক্ত পরিবেশ কায়েম করার ব্যাপারে সরকারের অঙ্গীকার করতে কোনও অসুবিধা নেই।
সাত সতেরো এই সব অঙ্ক নিয়েই এখন জুনিয়র ডাক্তারদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে সবাই। মনোজ পন্থের চিঠির পর তাঁরা বৈঠকে যেতে রাজি হয়ে যাবেন। নাকি আরও কিছু শর্ত চাপাবেন।