বিক্ষোভ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
শেষ আপডেট: 13th August 2024 11:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আন্দোলনের মুখে গতকাল, সোমবার সকালেই পদত্যাগ করেছিলেন আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। কিন্তু একবেলার মধ্যে, সোমবার বিকেলেই তাঁকে বহাল করা হয় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষর পদে। প্রতিবাদে খেপে ওঠেন সেখানকার পড়ুয়ারা। সন্দীপ ঘোষ বহাল হওয়ার খবর পেতেই হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, অধ্যক্ষ হিসেবে তাঁরা কোনওমতেই মানবেন না অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষকে।
আজ, মঙ্গলবারও সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন পড়ুয়ারা। অধ্যক্ষের জন্য নির্ধারিত ঘরের সামনে অবস্থানেও বসে পড়েন অনেকে। স্লোগান ওঠে সন্দীপের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, এর পরেও সন্দীপ ঘোষ কাজে যোগ দিতে এলে তাঁকে রুখতে ব্যারিকেড গড়ে প্রতিরোধ করবেন পড়ুয়া-চিকিৎসকরা।
সকাল ১০টা নাগাদ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পোঁছন সেখানকার রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা এন্টালির তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা। পৌঁছন রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ খানও। তাঁদের ঘিরে ধরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেন বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা। স্বর্ণকমল পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, 'আপনাদের কথা শুনব না, এমন নয়। আপনাদের বক্তব্য শুনতেই এসেছি।'
সোমবার সন্ধ্যা থেকেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করেন পড়ুয়াদের একাংশ। তালা ঝোলানো হয় অধ্যক্ষের জন্য নির্ধারিত ঘরে। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দাবি, কোনও অবস্থাতেই তাঁরা কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হিসাবে সন্দীপকে মেনে নেবেন না।
পড়ুয়াদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে সোমবার সকালে স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে পদত্যাগপত্র দিয়ে এসেছিলেন আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তিনি বলেন, "আমি কোনও চাপের মুখে পদত্যাগ করছি না। আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি। যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে তার অভিঘাতে আমি বিপর্যস্ত। শুধু একজন শিক্ষক হিসেবে নয়, একজন বাবা হিসেবেও কিছুতেই এটা মানতে পারছি না।"
একইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর মুখে কথা বসিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ রাজনৈতিক খেলায় নেমেছেন। এটা বুঝতে পেরে আরও মর্মাহত তিনি। এদিন সকালে প্রতিদিনের মতোই দফতরে আসেন ডাঃ সন্দীপ ঘোষ। কিছুক্ষণ পরে সাংবাদিকদের সামনে এসে নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। পরে স্বাস্থ্যভবনে গিয়ে তাঁর পদত্যাগ পত্র জমা দেন।
এর পরে বিকেলেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে প্রিন্সিপালের দায়িত্ব বহাল করা হয় তাঁকে। এই বিজ্ঞপ্তি জারির পরেই আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের কুশপুতুল পোড়ান আন্দোলনরত ডাক্তাররা।
প্রসঙ্গত, গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন, "উনি (সন্দীপ ঘোষ) জানিয়েছেন, মানসিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। আরজিকরের প্রিন্সিপালের পদ থেকে পদত্যাগ করতে চান। ওঁকে আমরা অন্য কোথাও পাঠাব।"
এরপরেই কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে বহাল করা হয় তাঁকে। অন্যদিকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের দায়িত্ব দেওয়া হয় ডাক্তার সুহৃতা পালকে।