শেষ আপডেট: 15th August 2024 21:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সিবিআই-তলবে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হলেন আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান অরুণাভ দত্ত চৌধুরী এবং প্রাক্তন সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠ। এছাড়াও সিবিআই ডেকেছিল ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের এক মহিলা অধ্যাপককেও। টালা থানার ওসি-ও সিবিআই দফতরে গিয়ে অফিসারদের হাতে কিছু কাগজ দিয়ে এসেছেন।
প্রসঙ্গত, এই চেস্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের ভিতরেই রয়েছে সেই সেমিনার হল, যেখান থেকে গত শুক্রবার সকালে উদ্ধার হয়েছিল তরুণী ডাক্তারের ক্ষকবিক্ষত ও ধর্ষিত দেহ।
মঙ্গলবার হাইকোর্টের নির্দেশের পরে বুধবার সকালেই দিল্লি থেকে কলকাতায় চলে এসেছে সিবিআইয়ের দল। একাধিক দলে ভাগ হয়ে ডাক্তার খুনের তদন্ত শুরু করেছে তারা। ইতিমধ্যেই কথা বলেছে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে। হেফাজতে নিয়েছে একমাত্র অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কেও, জেরা করেছে তাকে।
আজ, বৃহস্পতিবার থেকে সিবিআই তলব করতে শুরু করেছে এই মামলায় জড়িত আরও অন্যান্য ব্যক্তিদের। এদিন সকালেই সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠানো হয় হাসপাতালে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। ডাকা হয়েছিল কয়েক জন চিকিৎসক-পড়ুয়াকেও। নির্দিষ্ট সময়ে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছেন তাঁরা। সকলের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, আরজি কর কাণ্ডে সেই রাতে সঞ্জয়ের সঙ্গে আরও কেউ কেউ ছিল বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে এবার ধৃত সঞ্জয়ের মোবাইলের কল রেকর্ড, ঘটনার দিনের এবং তার আগের দিনের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। সঞ্জয় ঠিক কার কার সঙ্গে কথা বলেছিল, হোয়াটস অ্যাপ বা এই জাতীয় অন্য অ্যাপের সাহায্যে কল করেছিল কিনা, এব্যাপারে জানতে খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাঁর ডেটা খরচও।
সামান্য সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও পুলিশের অভ্যন্তরে সঞ্জয়ের এত প্রভাব কীভাবে, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর। মনে করা হচ্ছে, পুলিশের অভ্যন্তরের ওই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে আরজিকরেও দাপট চলতো সঞ্জয়ের। তা না হলে মাঝরাতে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার আরজি করের চারতলার সেমিনার হলে যেতে পারতেন না বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা।
অন্যদিকে, বুধবার গভীর রাতে আরজি করে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার তদন্তে আরজি করে এসে পৌঁছয় সিবিআই। প্রথমে বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ দুটি গাড়ি করে ঢোকেন ফরেন্সিক টিমের সদস্যরা। পরে সন্ধেয় হাসপাতালে ঢোকে সিবিআইয়ের বিশেষ টিম।
প্রথমেই তাঁরা পুলিশ ব্যারাক ও ইনচার্জ রুমে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন। তার পরে বাইরে ভিডিওগ্রাফি করেন। রীতিমতো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে যাচাই করেন ঘটনাস্থল। ফিতে-স্কেল দিয়ে গোটা জায়গায় মাপজোক করেন তাঁরা। টর্চ ও আতোস কাচ নিয়ে চলে নমুনা সংগ্রহের কাজ। এই স্পর্শকাতর ঘটনায় কোনও প্রমাণই হাতছাড়া করতে চায় না ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।
সূত্রের খবর, আরজি করে পৌঁছে ফরেন্সিক টিম প্রথমে পুলিশ ইনচার্জ রুমে ঢোকে। বুধবার রাতে সেই রুমের সব সিসিটিভি ভেঙে চুরমার করে দেয় ওই দুষ্কৃতীরা। ওই রুমের সিসিটিভির সমস্ত ফুটেজ স্টোর করা হতো। সেখানে থেকে নমুনা সংগ্রহের পর চলে যান পাশের একটি ঘরে। জানাগিয়েছে, হাসপাতালে ওই ঘরও পুলিশকর্মীদের বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ ছিল। সেই ঘরে গিয়ে তদন্ত চালায় ফরেন্সিক টিম।