শেষ আপডেট: 24 February 2024 21:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ৮০ বছরের বৃদ্ধা শাশুড়িকে মারধর, হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছিল বৌমার বিরুদ্ধে। বৌমা পেশায় আইনজীবী। অথচ পুলিশ তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করে উলটে ওই মহিলা আইনজীবীর অভিযোগের ভিত্তিতে বৃদ্ধার বিরুদ্ধেই এফআইআর দায়ের করে। এই মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। শুনানির সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ভর্ৎসনা করেন হাইকোর্টের বিচারপতি শম্পা দত্ত। এফআইআর ও চার্জশিট খারিজ করে দেয় আদালত।
সোনারপুরের বাসিন্দা অনুপম সর্দার ও তাঁর স্ত্রী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী। বারুইপুর থানায় অনুপমবাবু অভিযোগ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, বাড়িতে দাদা-বৌদি, ছোট বোন ও বৃদ্ধা মা থাকেন। মায়ের বয়স ৮০ ছাড়িয়েছে। অভিযোগ, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদের কারণে তাঁর বৃদ্ধা মা ও ছোট বোনকে প্রায়ই হেনস্থা করেন তাঁর দাদা ও বৌদি। এমনকী বৃদ্ধাকে নাকি মারধরও করেন বৌদি। বৌদি পেশায় আইনজীবী। তাই তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তি বেশি। এই নিয়ে থানায় অভিযোগ করেছিলেন অনুপমবাবু। অভিযোগ, পুলিশ সেই অভিযোগ শুনেও কোনও পদক্ষেপ করেনি। উল্টে বৌদি অর্থাৎ মহিলা আইনজীবীর অভিযোগ শুনে বৃদ্ধার বিরুদ্ধেই এফআইআর রুজু করে পুলিশ। এমনকী পুলিশ কোনওরকম তদন্ত না করেই থানার মধ্যেই সাক্ষী নিয়ে চার্জশিট ফাইল করে দেয় বলে অভিযোগ।
অনুপমবাবুর দাবি, ২০১৭ সালে ২৬ ডিসেম্বর বারুইপুর আদালতে পারিবাবিক বিবাদ সংক্রান্ত একটি মামলায় সাক্ষী দিতে গিয়েছিলেন তিনি ও তাঁর ছোট বোন। সেই সময়েও আইনজীবী বৌদি অভিযোগ করেছিলেন যে তিনি ও তাঁর বোন নাকি তাঁকে মারধর করেছেন। সেই নিয়েও পুলিশে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা আইনজীবী।
এরপরেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অনুপমবাবু। তাঁর আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী আদালতে বলেন, “বারুইপুর আদালত চত্বরে এক মহিলা আইনজীবীকে মারধর, হেনস্থা করা হল অথচ বার অ্যাসোসিয়েশনের কারও নজরেই পড়ল না। শুধু তাই নয়, সাত দিন পরে বারুইপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ কোনও তদন্ত না করেই চার্জশিট ফাইল করে দেয়। আর পুলিশের ভূমিকার কারণে একটি নিরীহ পরিবারকে হেনস্থার শিকার হতে হয়।”
আদালতের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের মন্তব্য, “পুলিশ তার দায়িত্ব নিরপেক্ষতার সঙ্গে পালন করেনি। শুধুমাত্র মহিলা আইনজীবী বলে, প্রাথমিক অনুসন্ধান না করেই তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এফআইআর করে চার্জশিট জমা দিয়েছিল। ভবিষ্যতে অবশ্যই পুলিশ আধিকারিকরা নজর রাখবেন এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের বক্তব্য নিয়েই যাতে তদন্ত করা হয়।”