জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে কাশ্মীরের পহেলগামের বৈসারণ উপত্যকায় বেলা আড়াইটে নাগাদ, একেবারে সাধারণ পোশাকে ওই এলাকায় এসে পর্যটকদের উপর গুলি ছুড়তে শুরু করেছিল জঙ্গিরা। জঙ্গিদের গুলিতে প্রথমে গুরুতর জখম হয়েছিলেন বিতান। তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
এই নারকীয় জঙ্গিহানায় এখনও পর্যন্ত ২৭ জন পর্যটকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহতের সংখ্যা আরও বেশি। মঙ্গলবার দুপুরে সশস্ত্র জঙ্গিরা হোটেলে ঢুকে বেছে বেছে পর্যটকদের উপর হামলা চালায়। হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই উত্তর ভারতের পর্যটক বলে জানা গেছিল। কিন্তু পরে জানা যায়, বাঙালি পর্যটকরাও সেখানে ছিলেন। বিতান তাঁদেরই একজন।
এই মর্মান্তিক ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বর্তমানে সৌদি আরব সফরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এক টুইটে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, “পহেলগামে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করছি। যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা রইল। আহতরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, সেই প্রার্থনা করি। ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে।”
সূত্রের খবর, জঙ্গিরা সেনাবাহিনীর পোশাক পরে বৈসারণ উপত্যকায় ঢোকে এবং হঠাৎ করেই পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ওই এলাকা কেবলমাত্র হেঁটে বা ঘোড়ার পিঠে করেই পৌঁছনো যায়। জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার স্থানীয় শাখা ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
হামলার পর দ্রুত সেখানে পৌঁছায় নিরাপত্তা বাহিনী। আহতদের উদ্ধার করে নিচে নামানো হয়, স্থানীয়রা ঘোড়ায় চাপিয়ে অনেককে নামাতে সাহায্য করেন। পরবর্তীতে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আহতদের সরানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই জানান, ঘটনাস্থলে চরম আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। একজন মহিলা কাঁদতে কাঁদতে তাঁর স্বামীকে বাঁচানোর জন্য সাহায্য চান। আরেকজন বলেন, এক বন্দুকবাজ তাঁকে বলে, “তুমি মুসলিম নও,” এবং গুলি চালায় তাঁর স্বামীর দিকে। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, জঙ্গিদের খুঁজে বের করার কাজ শুরু হয়েছে। গোটা অঞ্চল জুড়ে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।