ফাইল ছবি
শেষ আপডেট: 6 January 2025 04:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শনিবারই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এত সহজে তিনি ভয় পাওয়ার মানুষ নন। বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চমকানি ধমকানিতে তিনি যে একেবারেই ডরান না তার প্রমাণ দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। সূত্রের খবর, রবিবার প্রাক্তন বিচারপতির বিরুদ্ধে হেস্টিংস থানায় দায়ের হয়েছে এএফআইআর।
বাবুলের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে শনিবারই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন তমলুকের বিজেপি সাংসদ। অভিজিতের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর বাবুল মত্ত অবস্থায় তাঁর গাড়ি থামিয়ে হামলার চেষ্টা করে। তর্কাতর্কির সময় গাড়ির জানালার বাইরে থেকে হাত ধরে বাবুল। তাতে তাঁর মোবাইল পড়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তও হয় বলে অভিযোগ তোলেন। এমনকী তিনি ‘চাকরি খেয়েছেন’ বলেও বাবুল কটু মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ অভিজিতের। এরপরই তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।
তার কিছুক্ষণের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলাও পোস্ট করে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের তুলোধনা করেন রাজ্যের মন্ত্রী। আদালতে যাওয়ার ভয় দেখাতেই বাবুল পোস্টে লিখেছিলেন, “গ্ৰেফতার করতে কোথায় নিয়ে যায় দেখি, বিমানের টিকিট দেয় কী না দেখি তারপর। নিমন্ত্রণের অপেক্ষা শুরু।"
এখানেই থেমে থাকেননি বাবুল। কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিকে 'ফ্রাস্ট্রেটেড', 'অপদার্থ', 'ধর্মান্ধ' একাধিক ভাষায় আক্রমণও করেছিলেন। বাবুল লেখেন, "ফ্রাস্ট্রেটেড গাঙ্গুলিকে জানিয়ে রাখি, শুক্র ও শনিবার উনি যে আইনি ও সাংবিধানিকভাবে নিজেকে অপদার্থ হিসেবে প্রমান করেছেন আমাকে ভারতের কোনও এক রাজ্যে গ্ৰেফতার করাবেন বলে।"
অভিজিতের সেই ‘গ্রেফতারি’ মন্তব্যেই বেজায় চটেন রাহুল। বিজেপি সাংসদের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁকে খোলা চ্যালেঞ্জও ছোড়েন। এবার সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইনের রস্তায় হাঁটলেন বাবুল সুপ্রিয়। রবিবার হেস্টিংস থানায় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে বলে খবর।
কী নিয়ে ঝামেলার শুরু?
শুক্রবার রাতে প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ওপর বচসা চলে দুই নেতার। জানা গেছে, দুজনের গাড়িই কলকাতা থেকে হাওড়া যাচ্ছিল। বাবুলের দাবি, পিছন থেকে হর্ন বাজিয়ে প্রচণ্ড গতিতে একটি গাড়ি আসছিল। সেটি তাঁর গাড়িকে অতিক্রম করার চেষ্টা করে। তখন তিনি মুখ বাড়িয়ে ওই গাড়ির চালককে ধীরে চালানোর পরামর্শ দেন।
কিন্তু রাজ্যের মন্ত্রীর অভিযোগ, ওই গাড়িতে বসা ব্যক্তি তাঁর কথার তোয়াক্কা না করেই গাড়ি চালিয়ে যেতে বলেন চালককে। তখনও বাবুল জানতেন না, কে বসে আছে পিছনের সিটে। এরপর দ্বিতীয় গাড়িটি কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর সেটিকে কোনওরকমে থামান তিনি। দাবি করেন, গাড়িতে আর কেউ নন, বসে ছিলেন বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি সাংসদকে দেখতে পেয়ে গাড়ির পিছনের দিকে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। আস্তে চালানোর কথা বলেন। কিন্তু অভিযোগ, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে গালাগাল দেন এবং বলেন, 'যা করেছে বেশ করেছে।' বাবুলের দাবি অনুযায়ী তিনি বিজেপি সাংসদকে ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। কিন্তু ক্ষমা চাওয়া তো দূর, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নাকি তাঁকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করে 'দেখে নেওয়ার' হুঁশিয়ারি দেন।