শেষ আপডেট: 11th August 2024 09:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হাসপাতালের ভিতরে খুন হয়ে গিয়েছেন সহকর্মী। প্রতিবাদে-বিক্ষোভে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি আরজি কর হাসপাতালে। হাসপাতাল চত্বর ও হাসপাতালের সামনের রাস্তা জুড়ে চলছে চিকিৎসক-পড়ুয়াদের অবস্থান। এর মধ্যেই দফায় দফায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শনিবার। অভিযোগ ওঠে, প্রতিবাদীদের শাসন করতে গিয়ে কড়া পদক্ষেপ করছে পুলিশ।
এর মধ্যেই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়, তাতে দেখা যায়, টেনেহিঁচড়ে এক বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। একাধিক পুলিশ মিলে আর এক বিক্ষোভকারীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে, চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এক মহিলা বিক্ষোভকারীকে। এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি 'দ্য ওয়াল'।
যদিও এই মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের ডিসি( উত্তর) অভিষেক গুপ্তা জানান, বাইরের লোকেরা ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করছিল। পুলিশ পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। শনিবার বিকেলে শান্তিপূর্ণভাবেই প্রতিবাদ চলছিল হাসপাতালে। সেই সময় বাইরের কিছু লোক গেটের সামনে চলে আসে বলে দাবি পুলিশের। তাদের সঙ্গে নাকি সংঘাত বেঁধে যায় প্রতিবাদীদের। দু'পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে।
পুলিশের পাল্টা অভিযোগ, তাদের লক্ষ্য করে চটি, চপ্পল ছোড়া হয় ওই বহিরাগতদের তরফে। ধাক্কাও দেওয়া হয়। কিন্তু অভিষেক গুপ্তা জানিয়েছেন, পুলিশ সংযতভাবে তাদের চলে যেতে বলে। তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, আরজি করের পড়ুয়ারা তাদের চাইছে না। সেই সঙ্গেই ডিসি জানিয়েছেন, যারা এসেছিল তারা কারা জানা যায়নি, তবে দেখে মেডিক্যাল পড়ুয়া বলে মনে হচ্ছিল না।
প্রসঙ্গত, শনিবার আরজি করের বিক্ষোভে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজনও যোগ দিতে এসেছিলেন। এসেছিলেন বাম ছাত্র যুবরা। তবে বিক্ষোভকারী ডাক্তারি পড়ুয়ারা জানিয়ে দেন, তাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলকে চাইছেন না এই প্রতিবাদে। এই নিয়েও বচসা হয়। শুধু তাই নয়, আরজি করের পড়ুয়াদের একাংশও এদিন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। অন্যান্য জায়গা থেকে যে সমস্ত বিক্ষোভ দেখাতে এসেছিলেন তাদের সঙ্গেই আরজি করের পড়ুয়া-চিকিৎসকদের সংঘাত বেঁধে যায়।
এই নিয়ে আরজি করের পড়ুয়াদের দাবি, এই ঘটনায় যাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে আসছেন, তাঁরা যে দলের বা যে সংগঠনেরই হোক না কেন, তাঁরা সেই পরিচয় ও পতাকা নিয়ে আসবেন না। কারণ এমন একটা মৃত্যু নিয়ে কোনও দলবাজি চান না তাঁরা।
অন্যদিকে, ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে আরজি কর কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের। তার ফাঁসির দাবিতে শোরগোল চলছে রাজ্যে। যদিও এই অবস্থায় একটুও 'বিচলিত' নয় সঞ্জয়। বরং এখনও রয়েছে নিজের মেজাজেই! সূত্রের খবর, সঞ্জয় নিজেই তদন্তকারীদের বলেছে, তাঁকে ফাঁসি দিলে দিয়ে দিতে। এতে বোঝা যায়, যে ঘটনা সে ঘটিয়েছে তার জন্য কোনও অনুতাপই নেই সঞ্জয়ের।
সূত্র মারফত জানা গেছে, জেরার সময় নিজের দোষ স্বীকার করেছে সঞ্জয়। যদিও ঘটনার জন্য সে ক্ষমাপ্রার্থী নয়। বরং নিজেই নিজের ফাঁসি চেয়ে নিচ্ছে সে। গ্রেফতারির পর থেকে এখনও পর্যন্ত তার চোখে-মুখে অনুশোচনার লেশমাত্র ধরা পড়েনি। তাই অনুমান করা হচ্ছে, একেবারে নিজে সজ্ঞানে এই নৃশংস কাজ করেছে অভিযুক্ত। ইতিমধ্যে এও জানা গেছে, ঘটনার দিন মদ্যপ অবস্থায় ছিল সঞ্জয়। গভীর রাতে ঘুম থেকে টেনে তুলে ওই তরুণীর ওপর ভয়ানক অত্যাচার করেছে সে।