Date : 13th May, 2025 | Call 1800 452 567 | [email protected]
সংঘর্ষ বিরতি নিয়ে মোদীকে আক্রমণ নয়, বিরোধীদের আর্জি মেহবুবার, রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার আহ্বানপরিচালকদের পর প্রযোজকদের ‘একাংশ’র বিরুদ্ধে ‘অসহযোগিতা’ ফেডারেশনের?ছেলের স্বপ্ন ছিল আমার সঙ্গে থাকার, ক'দিন পরই নিয়ে আসতাম, তার আগেই সব শেষ: হাহাকার রিঙ্কুরঅস্ট্রেলিয়া সফর মানেই যেন আতঙ্ক! সিরিজ শেষেই অবসর, তালিকায় কিংবদন্তিরাএস-৪০০ ধ্বংসের দাবি করেছিল পাকিস্তান, তার সামনে দাঁড়িয়েই ছবি তুললেন মোদীশাহরুখের ছবিতে এই গানটি গাওয়ার কথা অভিজিতের, রাতারাতি নিজের 'নামে' করে নেন অনু মালিকহাওড়ায় মাকে খুন হতে দেখে চিৎকার শিশুকন্যার, পুলিশ এসে গ্রেফতার করল বাবা ও দাদাকেহাঁসফাঁস গরমেও খুচরো বাজারে স্বস্তি, খুশি মধ্যবিত্তরা, ৬ বছরে সর্বনিম্ন মূল্যবৃদ্ধিচারদিনে এক মঞ্চে দু'বার শরদ-অজিত, দুই এনসিপি'র মিশে যাওয়ার জল্পনা মহারাষ্ট্রেসব ধর্ষকের কঠিন সাজা হোক! এই বার্তা দিতেই দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছেন বাবা
Bhaswar Chatterjee

Pahalgam: পর্যটকদের মাথায় করে রাখেন স্থানীয়রা, ওদের পেটে লাথি মেরে, সুযোগ নেবে পাকিস্তান

Advertisement

আমি নিয়মিত কাশ্মীর যাই, আমি স্থানীয়দের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে মিশেছি। ওখানে আমি আমার বন্ধুর বাড়িতে থাকি, ওরা আমায় হোটেলে থাকতে পর্যন্ত দেয় না। ওদের কাছেই সবচেয়ে ভালভাবে বুঝেছি, পর্যটক ওদের কাছে কী। ওঁরা পর্যটকদের ভগবান মনে করেন। ট্যুরিস্টদের পারলে মাথায় করে রাখেন।

Pahalgam: পর্যটকদের মাথায় করে রাখেন স্থানীয়রা, ওদের পেটে লাথি মেরে, সুযোগ নেবে পাকিস্তান

কাশ্মীরি বন্ধুদের সঙ্গে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

শেষ আপডেট: 23 April 2025 16:34

ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়

আমি যে কাশ্মীরকে (Kashmir) দেখেছি, আমি যে কাশ্মীরকে চিনি, এই কাশ্মীর সেই কাশ্মীর নয় (Kashmir Terror Attack)। কালকের ঘটনায় আমি সাংঘাতিক ভাবে ডিস্টার্বড (Pahalgam)। আমি রাতে ঘুমোতে পারিনি। 

আমি নিয়মিত কাশ্মীর যাই, আমি স্থানীয়দের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে মিশেছি। ওখানে আমি আমার বন্ধুর বাড়িতে থাকি, ওরা আমায় হোটেলে থাকতে পর্যন্ত দেয় না। ওদের কাছেই সবচেয়ে ভালভাবে বুঝেছি, পর্যটক ওদের কাছে কী। ওঁরা পর্যটকদের ভগবান মনে করেন। ট্যুরিস্টদের পারলে মাথায় করে রাখেন।

আমার সঙ্গে এমনও ঘটেছে, আমি হয়তো কাশ্মীরের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি কোথাও একটা, এমনিই যাচ্ছি বন্ধুর সঙ্গে—আমি তো কাশ্মীরি নই, আমার মুখ দেখলেই বোঝা যায় আমি বাইরে থেকে এসেছি। তো স্থানীয়রা কৌতূহলে জানতে চান, কোথা থেকে আসছেন। আমি হয়তো বললাম কলকাতা থেকে এসেছি। এর পরেই ওপার থেকে প্রস্তাব আসে, ‘আপ আইয়ে মেরে ঘর, থোড়াসা খানা খাকে যাইয়ে।’

আমার এটা বলতে গিয়েও গলা ধরে আসছে, আমার সত্যিই ভাষা নেই এই ঘটনা বর্ণনা করার। আমি হয়তো বেশিই ইমোশনাল হয়ে পড়ছি। 

আমি কাশ্মীরকে আমার বাড়ি বলে মনে করি। ‘সেকেন্ড হোম’। এটাই বলি আমি। কালকের ঘটনার পর থেকে আমার কাশ্মীরি বন্ধুদের সঙ্গে আমার অনেকবার কথা হয়েছে। ওরা অসম্ভব ভীত। একই সঙ্গে ওরা এই ঘটনার খুবই নিন্দা করছে, ওরা এটার বিরোধী। 

কালকে ওখানে এই ঘটনার প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিলও হয়েছে। সেই মিছিলে স্থানীয়রাই গলা তুলে বলেছেন, ‘খুনিদের খুঁজে বার করে শেষ করো।’ 

এই কাশ্মীরও কিন্তু আগে ছিল না। নয়ের দশকে যখন সন্ত্রাস চলেছিল, কাশ্মীরি পণ্ডিত হিন্দুদের টেনে টেনে ঘর থেকে বের করে মারা হয়েছিল, তখন কিন্তু প্রতিবাদের কোনও লেশ দেখা যায়নি। সেই কাশ্মীর আর এই কাশ্মীর কিন্তু আলাদা। 

সেদিনের কাশ্মীরি তরুণ সমাজ আর এদিনের কাশ্মীরি তরুণ সমাজে অনেক ফারাক। আজকের ছেলেমেয়েরা গলা তুলে বলতে পারছে, ‘এই সন্ত্রাস আমরা মেনে নিচ্ছি না, এই সন্ত্রাস আমরা সহ্য করছি না।’ তারা প্রতিবাদ করছে। 

এর উপরে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, কাশ্মীরে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নয়ন হচ্ছে। আর্থিক উন্নয়ন। তার মূল কারণ, ট্যুরিজম। শেষ এক বছরের হিসেবে সম্ভবত, প্রায় ৩০ লক্ষ পর্যটক পা রেখেছেন উপত্যকায়। এটা খুবই পজিটিভ একটা ব্যাপার, কারণ তাঁরা যাওয়ার আস্থা রেখেছেন। কাশ্মীরও বদলাচ্ছে। সেখানে সিনেমাহল হচ্ছে, মল হচ্ছে। সম্প্রতি শুনেছি ইমরান হাশমির কোনও একটা ফিল্ম, গ্রাউন্ড জিরো, তার প্রিমিয়ার হবে কাশ্মীরে।

আমার মনে হয়, এই উন্নতি, এই অর্জন মেনে নিতে পারছে না প্রতিবেশী দেশ। ওরা ভাবছে, ‘আবার! আবার এরা মাথাচারা দিয়ে উঠছে, এরা ভাল আছে! এরা শান্তির পথে রুটিরুজি জোগাড় করছে! এদের ধ্বংস করো।’ 

সেটা কেন করছে? কারণটা খুবই সহজ বলে আমার মনে হয়। দেখতে গেলে, এই ঘটনায় সবচেয়ে ক্ষতি হল কাশ্মীরের স্থানীয় লোকেদেরই। তাদের পেটে লাথি পড়ল। এ কথা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না, আগামী কয়েক মাস, বা হয়তো বছর পর্যন্ত কাশ্মীরে আর পা রাখবেন না পর্যটকরা। ফলে স্থানীয়দের একটা বড় অংশ আবার বেকার হয়ে যাবেন। তাঁদের রোজগারের পথ তো বন্ধ। 

তখন এই বেকারত্বকে কিন্তু পাকিস্তান আবারও কাজে লাগাবে। প্রস্তাব দেবে, টাকার বদলে ওদের গ্রুপে যোগ দেওয়ার, অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার এবং আরও নানারকম অপরাধে শামিল হওয়ার। 

সব মিলিয়ে কাশ্মীর আবারও অন্ধকারে ফিরে যাবে, ঘরে-ঘরে অন্ধকারের চাষ হবে আবার। যা গ্রোথ গত কয়েক বছরে হয়েছে, যে শান্তি ফিরেছে, যে আশার আলো দেখা গেছে, সবটা এক ঝটকায় আবার শূন্যেরও নীচে নেমে যাবে। এটাই তো চায় পাকিস্তান!

(লেখক পেশায় অভিনেতা, কাশ্মীর নিয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা রয়েছে, 'অন্য উপত্যকা' বইয়ের লেখক।)

Advertisement

Advertisement


ভিডিও স্টোরি