শেষ আপডেট: 13th September 2023 09:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের কেরলে নিপা ভাইরাসের চোখ রাঙানি শুরু হল। দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে নিপা ভাইরাসের আতঙ্ক নতুন করে মাথাচাড়া দিল। এই ভাইরাসের কারণে কোঝিকোড়ে দু'জনের মৃত্যু (Kerala Nipah deaths) হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে বুধবার কন্টেনমেন্ট জোন (containment zones) ঘোষণা করল কেরল সরকার। সেইসঙ্গে গ্রামবাসীদের জন্যও কড়া সতর্কতা জারি করেছে।
গত বছর করোনার চোখ রাঙানির মধ্যেই নিপা ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত দেখেছিল দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যটি। বিশেষ করে কেরলের কোঝিকোড়ে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে। এবছর ওই জেলা থেকেই এখনও পর্যন্ত ৪ জন আক্রান্তের খবর মিলেছে, যার মধ্যে একজন ৯ বছরের বাচ্চাও রয়েছে।
এই নিপা ভাইরাসের প্রকোপ নিয়ে বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ বলেন, নিপা ভাইরাস বাংলাদেশের ভ্যারিয়েন্ট। এই ভাইরাস মানুষের মাধ্যমে ছড়ায়। এতে মৃত্যু আশঙ্কা বেশি থাকে।
কোঝিকোড় জেলার কালেক্টর এ গীতা জানিয়েছেন, আতাঁচেরি, মারুথনকারা, তিরুভাল্লুর, কুত্তিয়াদি, কায়াক্বদি, ভিল্লিপাল্লি এবং কাভিলাম্পরা--- এই সাত গ্রাম কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই জোনে ঢোকা ও বেরনো নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকবে। বন্ধ থাকবে স্কুলও।
২০০১ সালে নিপা ভাইরাস মাথাচাড়া দিয়েছিল ভারতে। সংক্রমিত ৬৬, মৃত্যু কম করেও ৪৫। বাংলাদেশে ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সাল অবধি দাপিয়ে বেড়িয়েছে নিপা ভাইরাস। পশ্চিমবঙ্গে শিলিগুড়িতে একসময় এই ভাইরাসের সংক্রমণ খুব বেশিমাত্রায় ছড়িয়েছিল।
নিপা ভাইরাসকে বলে জুনটিক ভাইরাস, অর্থাৎ পশুর থেকে মানুষের শরীরে ছড়াতে পারে। এই ভাইরাসের বাহক বলা হয় বাদুড়কে। ফ্লাইং ফক্স (বৈজ্ঞানিক নাম পিটারোপাস মিডিয়াস) নামে এক ফলভোজী বাদুড় এই ভাইরাসের বাহক। বাদুড় থেকে কুকুর, বিড়াল, ছাগল, ঘোড়া বা ভেড়ার শরীরে মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। আক্রান্ত পশুদের দেহের অবশিষ্টাংশ, বা মলমূত্র থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
নিপা ভাইরাস আক্রান্ত হলে কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, আক্রমণ প্রতিরোধ করার মতো কোনও টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। ফলে মৃত্যুর হার বিশ্বে গড়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ। রোগের উপসর্গ প্রথম অবস্থায় অন্য যে কোনও ভাইরাস সংক্রমণের মতোই। জ্বর, মাথাব্যথা, বমি। কিন্তু পরে ধাপে ধাপে ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, জ্বর, মাথাব্যথা, বমির মতো উপসর্গ থাকলেই চিকিৎসার প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গি হলেই প্রচুর জল নয়, নয় প্লেটলেট নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তি, সচেতনতার সঙ্গে চাই সতর্কতাও