কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: 8th April 2025 16:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে তৃণমূল (TMC) সাংসদদের কোন্দল চলে এল একেবারে প্রকাশ্যে। সাংবাদিক বৈঠক করে দলেরই সাংসদ সৌগত রায়, কীর্তি আজাদ এবং মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। প্রথম দুজনের নাম মুখে আনলেন তৃতীয় জনের নাম উচ্চারণ করেননি তিনি। তবে যা যা বলেছেন, তাতে সকলেই বুঝতে পেরেছেন কাকে নিশানা করলেন কল্যাণ।
ভূতুড়ে ভোটার ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনে যে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল তৃণমূল তাতে মহুয়া মৈত্রর নাম ছিল না। কোন্দলের সূত্রপাত এখান থেকেই। এই ইস্যুতেই কল্যাণ এবং মহুয়ার মধ্যে তুমুল বচসা হয় কমিশনের অফিসের সামনেই। সূত্রের দাবি, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সামনে কল্যাণের উপর এমন ভাবে চড়াও হন মহুয়া, যে কল্যাণও মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেননি। দু-চার কথা তিনিও শুনিয়ে দেন। তার পরেই আবার নিরাপত্তা কর্মীদের উদ্দেশে মহুয়া বলতে শুরু করেন, আমাকে হেনস্থা করা হচ্ছে, ওঁকে গ্রেফতার করুন। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সামনে এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়েই কার্যত বিস্ফোরণ ঘটান শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ।
নাম না করে মহুয়ার উদ্দেশে বলেন, ''সংসদে শুধু নরেন্দ্র মোদী এবং আদানির বিরুদ্ধে কথা বলেন ওই মহিলা সাংসদ। আর কারও বিরুদ্ধে কোনও কথা নেই। আর আমি দলের হয়ে সব ক্ষেত্রে লড়াই করি। মানুষের স্বার্থে কথা বলি। সব সহ্য করব, এমন অসভ্যতা সহ্য করব না।'' কল্যাণের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে নিয়েও মন্তব্য করেছেন 'মহিলা সাংসদ'। পাশাপাশি তাঁকেও কটূক্তি করা হয়েছে। তিনি সাফ জানান, মহিলা সাংসদ বলে পুরুষদের অপমান করে যাবেন, এমন অধিকার তাঁকে কেউ দেয়নি। কটাক্ষ, শুধু ইংরেজিতে ফটর ফটর করে গেলেই অপমানের অধিকার মেলে না।
মহুয়ার পাশাপাশি এদিন দলের আরেক সহকর্মী সৌগত রায়কেও বিরল আক্রমণ করেন কল্যাণ। তাঁকে সরাসরি চোর বলেন তিনি, তুলে আনেন নারদা প্রসঙ্গ। কল্যাণ বলেছেন, "সৌগত রায়ের কোনও ক্যারেক্টর নেই, নারদায় টাকা নিয়েছেন। ওঁর জন্য দলেই ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।" এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ঘুরেফিরে আবার সেই মহুয়া মৈত্রকেই টেনে আনেন তিনি। বলেন, 'সব চোরগুলো এক জায়গায় চলে এসেছে। এটা ভাল জিনিস হয়েছে। কেউ উপহার নিচ্ছে, কেউ লন্ডনে যাচ্ছে। কেউ টাকা খাচ্ছে। দু-নম্বরি লোকেদের এক জায়গায় আসতে বেশিক্ষণ সময় লাগে না।'
এত বড় 'বিস্ফোরণ' ঘটানোর পর হঠাৎ রাজনীতির ছাড়ার প্রসঙ্গ তোলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ জানান, ৪০ বছর ধরে রাজনীতি করেন। দিদি বললে ইস্তফা দেবেন, কিন্তু কোনও অসভ্যতা সহ্য করবেন না।