শেষ আপডেট: 28th January 2025 12:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি মৃত্যুর জেরে প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে ছিল রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা। ইতিমধ্যে ১২ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এফআইআরও করেছে রাজ্য। তারই মধ্যে সামনে এল মাতৃমৃত্যুর হারের পরিসংখ্যান। যা যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত বছরে এপ্রিল মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শেষ ৯ মাসে রাজ্যে মাতৃমৃত্যুর হার ৭৯ (প্রতি এক লক্ষ প্রসবে)। তার আগের আর্থিক বর্ষে অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রাজ্যের অর্থবর্ষে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৯৪। অর্থাৎ পরিসংখ্যানের নিরিখে এক বছরে সংখ্যাটা অনেকটাই কম। তাৎপর্যপূর্ণভাবে শেষ ৯ মাসে কালিম্পং জেলায় একটিও মাতৃমৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেন্দ্রের তরফে প্রতি দু বছর অন্তর মাতৃমৃত্যুর হার প্রকাশ করা হয়। এটিকে বলা হয় 'স্যাম্পেল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম' বা এসআরএস বুলেটিন। চলতি বছরে এই বুলেটিন এখনও প্রকাশ হয়নি। ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত শেষ বুলেটিন অনুযায়ী, প্রতি এক লক্ষ প্রসবে দেশে গড় মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৯৭। বাংলার মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ১০৩। তবে যেহেতু এই বুলেটিনের দু'বছর আগের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় তাই এর সঙ্গে বর্তমানের মিল খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয় বলেই মত চিকিৎসকদের।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, যে যে ক্যাটাগরির ভিত্তিতে এসআরএস বুলেটিন তৈরি করা হয়, সেই বিষয়গুলির ভিত্তিতে রাজ্যের রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। ওই স্বাস্থ্যকর্তার আরও দাবি, মাতৃমৃত্যুর হারের দিক থেকে শেষ তিন বছরে রাজ্যের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট অনুযায়ী, কম মাতৃমৃত্যুর হারের দিক থেকে কালিম্পং এর পরেই রয়েছে নদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং এবং মালদহ। অন্যদিকে পুরুলিয়া, হাওড়া এবং জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক।
রাজ্যে গড় মাতৃমৃত্যুর হার যেখানে শেষ ন'মাসে মাত্র ৭৯ সেখানে এই তিন জেলায় মাতৃমৃত্যুর হার যথাক্রমে ১৪৯, ১৪২ এবং ১২৫।
একইভাবে আরও সাতটি জেলার পরিসংখ্যানও যথেষ্ট শোচনীয়। জানা যাচ্ছে পশ্চিম বর্ধমানে ১১৪, মুর্শিদাবাদে ১০৪, বসিরহা স্বাস্থ্য জেলায় ১০৪, বাঁকুড়াতে ৯৯, পূর্ব বর্ধমানা ৯৭, রামপুরহাটে ৯১ এবং বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্যজেলায় ৮৯ জন প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।