শেষ আপডেট: 1st June 2018 05:07
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কাইরানা রক্তের স্বাদ দিয়েছে। এ বার বারাণসীতেও একের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ের ভাবনা শুরু করে দিল বিরোধীরা। বারাণসী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচন কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার কাইরানার ফল দেখার পর কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টির বহু নেতা বলতে শুরু করেছেন, লোকসভা ভোটে মোদীর বিরুদ্ধেও সমষ্টিগত ভাবে এক জন প্রার্থীই দেওয়া হোক। দরকার হলে, বারাণসীকে ঘিরতে আলোচনা শুরু করে দেওয়া হোক এখন থেকেই। গত লোকসভা ভোটে দুটি লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমটি তাঁর নিজের রাজ্য গুজরাতের বদোদরা। দ্বিতীয়টি বারাণসী। পরে বদোদরা আসনটি ছেড়ে কৌশলে বারাণসী আসনটি রেখে দেন তিনি। যাতে হিন্দিবলয়ের সব থেকে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে প্রভাব অটুট থাকে বিজেপি-র। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে সন্মিলিত বিরোধীদের মুখে পড়ে বিজেপি যে বেসামাল হয়ে পড়ছে তা পর পর তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনেই প্রমাণিত। খোদ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পাঁচ বারের জেতা আসন গোরক্ষপুরে সম্প্রতি হেরেছে বিজেপি। মায়া-অখিলেশ জোটের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে একদা জওহরলাল নেহরুর নির্বাচন কেন্দ্র ফুলপুরে। তার পরই কাইরানা লোকসভার উপভোটে পরাস্ত হয়েছে। লখনউতে এর পরই গুঞ্জন শুরু হয়েছে বারাণসী নিয়ে। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের মুখপাত্র অখিলেশ প্রতাপ সিংহ বলেন, “বারাণসীতে আলবাত একের বিরুদ্ধে এক লড়াই হবে। এবং তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে খুব শিগগিরি।” অন্যদিকে সমাজবাদী পার্টির সহ সভাপতি কিরণ্ময় নন্দ বলেন, “বারাণসীর মানুষকে ধোঁকা দিয়েছেন মোদী। এ বার তার জবাব মিলবে। গত লোকসভা ভোটে বারাণসীতে পঞ্চমুখ লড়াই হয়েছিল। ভোট ভাগাভাগির সেই সুবিধা পেয়েছিলেন মোদী। এ বার কাইরানা মডেলের বাস্তবায়ন হবে সেখানে।” সপা-বসপা নেতাদের বক্তব্য, বারাণসীতে বহু মানুষের মোদীর বিরুদ্ধে অসন্তোষ হয়েছে। যে কারণে ওই লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপি ভাল ফল করতে পারেনি। বারাণসী শহরেও তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। যে কে সেই অবস্থা। বলা হয়েছিল, বারাণসী জাপানের কিয়োটো শহরের সিস্টার সিটি হবে। কিরণ্ময় নন্দ খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘সিস্টার’ পরের কথা দূর সম্পর্কের আত্মীয়ও হয়নি। কুটোটা নড়েনি বারাণসীতে। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি নেতারা বিরোধীদের এই আস্ফালনে কোনও গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। তাঁদের বক্তব্য, বারাণসীতে মোদীর জনপ্রিয়তা যে শিখরে রয়েছে, তার ধারে কাছেও কেউ নেই। প্রসঙ্গত, গত লোকসভা ভোটে বারাণসী লোকসভা কেন্দ্রে ৩ লক্ষ ৭১ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন মোদী। দ্বিতীয় হয়েছিলেন আম আদমি পার্টি নেতা তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। মোদীর জয়ের ব্যবধান এতটাই ছিল যে বারাণসীতে এখনও তাঁকে বেগ দেওয়া কম কথা নয়। তবে বিরোধীদের বক্তব্য, সপা-বসপা-কংগ্রেস বারণসীতে যৌথ ভাবে প্রার্থী দিলে চাপে পড়ে যাবেন নরেন্দ্র মোদী। জেতা হারা পরের কথা, মোদীকে অনেকটাই বেঁধে রাখা যাবে বারাণসীতে। তা ছাড়া পরিস্থিতি দেখে যদি তিনি বারাণসীর পাশাপাশি গত বারের মতোই দ্বিতীয় কোনও আসন বেছে নেন তা হলে সেটাও বিরোধীদের জয় হবে।