শেষ আপডেট: 11th January 2024 12:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লোকে বলে, তিনি জনগণের বিচারপতি। চাকরিপ্রার্থীদের কাছে তিনি সাক্ষাৎ ভগবান। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর একাধিক রায় এবং পর্যবেক্ষণ ভরসা জুগিয়েছে মানুষকে। আবার রাজনৈতিক মহলের অভিমত, রাজ্যের বতর্মান পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ অস্বস্তিতে ফেলেছে শাসক দলকে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এমন একটা নাম, যাঁর কথা শুনলেই শাসক হোক, বা বিরোধী, কিংবা আমজনতা, একবার ফিরে তাকাবেনই তাকাবেন। সেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবার অন্য ভূমিকায়। মানুষকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়ার পাশাপাশি এবার বই লিখছেন তিনি। আসন্ন কলকাতা বইমেলাতেই প্রকাশ পাবে তাঁর লেখা কবিতার বই।
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের সমান। মনের ভাব প্রকাশের জন্য সেই ভাষার জুড়ি মেলা ভার। তাই সেই মাতৃভাষাতেই বই লিখছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এজলাসে বসে বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি। তার জন্য আদালতে বাংলা ভাষায় শুনানির পক্ষে সওয়াল করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, "ইংরেজরা ইংরেজি ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালত সহ বিভিন্ন জায়গায় ইংরেজি ভাষার প্রচলন করেছিল। তাহলে আমরা বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই প্রচেষ্টা চালাব না কেন?"
আজকের দিনে দাঁড়িয়েও বাংলা ভাষায় মামলা গ্রহণ না করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর এজলাসে কেউ বাংলায় মামলা করলে তিনি তা গ্রহণ করেন। এতে অন্যদের আপত্তি থাকার কথা নয়। এরপরেই সুখবর দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, আসন্ন বইমেলায় তাঁর লেখা একটি বাংলা কবিতার বই বেরোচ্ছে। বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই তাঁর এই প্রয়াস।
আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা। যদিও কোন প্রকাশনা থেকে তাঁর বই বেরোচ্ছে, কত নম্বর স্টলে তা পাওয়া যাবে সে ব্যাপারে কিছু জানাননি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
এর আগে এমন অন্য ভূমিকায় দেখা গেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রশাসনের গুরুদায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি তিনি বাংলা কবিতা লিখতে ভালবাসেন, ছবিও আঁকতে ভালবাসেন। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা শতাধিক কবিতার বই প্রকাশ পেয়েছে ইতিমধ্যেই, যেগুলির মধ্যে কয়েকটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। সেসব বইয়ের রেকর্ড বিক্রিও হয়েছে। এবার তাঁর মতোই কলম হাতে তুলে নিতে দেখা যাচ্ছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কেও। বিচার ব্যবস্থার আঙিনা পেরিয়ে এবার কি সাহিত্যের আঙিনাতেও একই রকম জনপ্রিয়তা পাবেন তিনি? তার উত্তর পেতে গেলে অপেক্ষা করতে হবে বইমেলা পর্যন্ত।