শেষ আপডেট: 12 February 2024 17:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: খুনের অপরাধে জেলবন্দি অসীমা বিশ্বাস। জেলে থাকাকালীনই বিকল হয়ে গেছে দুটি কিডনি। বাঁচার আশা ক্ষীণ। শেষের এই দিনগুলি ১২ বছরের আত্মজার সঙ্গে কাটানোর ইচ্ছে প্রকট হয়ে উঠেছে। জানেন সব। তবুও কী করে দিদির এই শেষ ইচ্ছে পূরণ করবেন সেটা জানা নেই বোন অর্পিতা নাথের। দিনরাত টিউশন পড়িয়ে গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতে হয় নিজের, মায়ের আর ক্লাস সেভেনের পড়ুয়া বোনঝির। তারই ফাঁকে ঘুরছেন আদালতের অলিন্দে। যদি কিছু ব্যবস্থা হয়।
হাইকোর্টে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে বিচারাধীন মামলায় দীর্ঘদিন ধরে দিদির জামিনের আবেদন করতে পারছেন না অর্পিতা। দিদির ক্লাস সেভেনে পড়া মেয়েটিকে নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। মৃত্যু পথযাত্রী মায়ের শেষ ইচ্ছে পূরণের আবেদনে কিছু একটা করুন। সঙ্গে সঙ্গেই আইনজীবীকে তলব করে দ্রুত শুনানি কীভাবে করা যায় তার পরামর্শ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
শাশুড়িকে খুনের অভিযোগে ২০১৭ সাল থেকে জেলে রয়েছেন অসীমা। ২০২১ সালে তাঁকে ১৪ বছরের সাজা দেয় রানাঘাট আদালত। জেলে থাকতে থাকতেই বিকল হয়ে গেছে তাঁর দুটো কিডনি। এখন জেল হাসপাতালে চিকিত্সা চললেও বেশিদিন বাঁচার আশা নেই। ১২ বছরের মেয়েটাকে আঁকড়ে যদি কাটানো যেত জীবনের শেষ কয়েকটা দিন, এই ভাবনাটাই কুড়ে কুড়ে খায়। কিন্তু হাইকোর্টে মামলার শুনানিই যে হচ্ছে না।
সোমবার দিদির মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন অর্পিতা। তাঁর মুখে সব শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আইনজীবী সুনন্দা ভাটকে ডেকে পাঠান। আইনজীবী সুনন্দা বলেন, "আগেও একবার তাঁর জামিনের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করেছিল আদালত। বর্তমানে অন্য আইনজীবীর হাত ঘুরে আমার কাছে এসেছেন মামলাকারী। যদিও সম্পূর্ণ কাগজপত্র আমি হাতে পাইনি। যেহেতু একবার জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে তাই দ্বিতীয়বার জামিনের আবেদন করতে গেলে নতুন কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন। বিশেষ করে মেডিকেল রিপোর্ট প্রয়োজন। সেই কাগজপত্রগুলো পেলে নতুনভাবে জামিনের আবেদন করা যায়।"
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আবেদনকারীকে আজই আইনজীবীর কাছে কাগজপত্র জমা দিতে বলেন। একই সঙ্গে আইনজীবী সুনন্দা ভাটকে আগামীকালই বিচারপতির জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে গিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি উল্লেখ করে মেডিকেল রিপোর্ট-সহ নতুন ভাবে জামিনের আবেদন করার পরামর্শ দেন।