শেষ আপডেট: 12th January 2025 08:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দশম শ্রেনীর ছাত্রী। শরীরে স্পষ্ট যৌবনের ছাপ। তারপরেও একের পর এক ছাত্রীদের শার্ট খুলতে বললেন স্কুলের প্রিন্সিপাল। অনেক কান্নাকাটি, কাকুতি-মিনতি করার পরেও কোনও কথা কানে তুললেন না। বরং শার্ট খুলিয়ে ওই অবস্থাতেই ফেরত পাঠালেন বাড়ি। ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলায় একটি বেসরকারি স্কুলে এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
স্কুলের দশম শ্রেণির ৮০ জন ছাত্রীকে শার্ট খুলতে বাধ্য করেন স্কুলের প্রিন্সিপাল। ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন দশম শ্রেণির পরীক্ষা শেষে দীর্ঘদিনের সহপাঠীরা একে অপরের থেকে দূরে চলে যাওয়ার জন্য মন খারাপ করে। ছাত্রীদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের স্কুল শার্টে একে অপরের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বার্তা এবং ভালবাসার কথা লিখেছিল। কিন্তু প্রিন্সিপালের নজরে এলে বিষয়টি সম্পূর্ণ অন্যরূপ নেয়। তিনি এটিকে বিশৃঙ্খলার বলে মনে করেন এবং ছাত্রীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রিন্সিপাল কোনও অনুরোধ না শুনে সরাসরি ৮০ জন ছাত্রীকে নির্দেশ দেন শার্ট খুলে দিতে। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ছাত্রীদের বাড়ি ফেরত পাঠানোর সময় তাদের শার্ট ফেরত দেওয়া হয়নি। ছাত্রীদের অনেকেই বাধ্য হয়ে শুধুমাত্র ব্লেজার পরে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে যায়।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ছাত্রীদের অভিভাবকরা প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা সরাসরি ধানবাদ জেলার ডেপুটি কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানান। প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে এবং প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয়। জেলা প্রশাসন এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে থাকছেন সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা শিক্ষা আধিকারিক, জেলা সমাজ উন্নয়ন আধিকারিক এবং সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার। এই কমিটি বিস্তারিত তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবে। রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই ঘটনা ছাত্রীদের উপর গভীর মানসিক আঘাত হেনেছে। অভিভাবকদের প্রশ্ন, একটি স্কুল, যেখানে পড়ুয়াদের শারীরিক এবং মানসিক সুরক্ষার দায়িত্ব থাকে, সেখানে এ ধরনের অমানবিক আচরণ কীভাবে সম্ভব? জানা গিয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে স্কুলের পরিচালন সমিতি এবং স্থানীয় প্রশাসনও যথেষ্ট বিব্রত।