শেষ আপডেট: 4th March 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড়সড় অসঙ্গতি রয়েছে। সেই সংক্রান্ত মামলায় ফের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র আতস কাচের নীচে জেট এয়ারওয়েজের প্রতিষ্ঠাতা-কর্ণধার নরেশ গয়াল। বুধবার রাতে জেট কর্তার মুম্বইয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালালেন ইডি আধিকারিকরা। ইডি-র অভিযোগ, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ৪৬ কোটি টাকার অসঙ্গতি রয়েছে নরেশ গয়াল ও তাঁর স্ত্রী অনিতার নামে। গত বছর এপ্রিলেই নিজেদের সমস্ত উড়ান বন্ধ করে দেয় জেট এয়ারওয়েজ। তাদের বিরুদ্ধে শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে অসঙ্গতি সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত করছে ইডি। বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন (ফেমা)-এ চলছে সেই তদন্ত। সেই সূত্রে গত বছর সেপ্টেম্বরেই একবার নরেশের মুম্বই ও দিল্লির একাধিক বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। তবে ওই তল্লাশিতে কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করা বা সন্দেহজনক কিছু পাওয়া গিয়েছে কিনা,তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি ইডি আধিকারিকরা। ২০১৪ সালে জেট প্রিভিলেজ লিমিটেড-এর শেয়ার কিনে বিনিয়োগ করে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিমান সংস্থা এতিহাদ এয়ারওয়েজ। অভিযোগ ওঠে, ওই চুক্তিতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের নিয়ম মানা হয়নি। সেই অভিযোগেরই তদন্ত শুরু করেছে ইডি। তাঁদের দাবি, বিদেশি মুদ্রা আইন (ফেমা) লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে জেটের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। নরেশের বিদেশ যাত্রার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইডি। গত বছর মে মাসে মুম্বই বিমানবন্দর থেকে এমিরেটস একে-৫০৭ উড়ানে চেপে বসেছিলেন নরেশ-অনিতা। গন্তব্য ছিল দুবাই। বিমান রানওয়ে দিয়ে গড়াতেই হাজির হন অভিবাসন দফতরের কর্তারা। জরুরি নোটিস পাঠিয়ে বিমান ফিরিয়ে আনা হয় টার্মিনালে। জেটের প্রতিষ্ঠাতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়, যতদিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, দেশ ছেড়ে যেতে পারবেন না কেউই। এই মুহূর্তে বাজারে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার দেনা রয়েছে জেটের। ঋণভারে জর্জরিত জেট এয়ারওয়েজ থেকে কার্যত সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন নরেশ গয়াল ও তাঁর স্ত্রী অনিতা। জানিয়ে দিয়েছেন, এয়ারওয়েজের বোর্ডেও আর তাঁদের কোনও শেয়ার থাকছে না। বোর্ড থেকেও ইস্তফা দিয়ে দিয়েছেন দু’জনে। দেনা আর ক্ষতির বোঝায় ধুঁকতে থাকা বিমান পরিষেবা সংস্থাটির নিয়ন্ত্রণ আপাতত চলে গেছে স্টেট ব্যাঙ্ক সমেত ঋণদাতাদের হাতে। ১৯৯৩ সালে চারটি ভাড়া করা বিমান নিয়ে পথচলা শুরু জেটের। সেই সময় জেটের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল সিটিলিঙ্ক, ইস্ট-ওয়েস্ট, দামানিয়া-র মতো বিমান সংস্থা। পরে এই সংস্থারগুলি হাত গুটিয়ে নেয়। তদানীন্তন ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে যায় একমাত্র জেট এয়ারওয়েজ। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা শুরু হয় জেটে। ২০০৯ সালে সাহারার লোকসানে চলা উড়ান সংস্থা কেনেন নরেশ গয়াল। একসময় অভিযোগ ওঠে, অপরাধ জগতে টাকা খাটছে জেটের, নাম জড়ায় দাউদ ইব্রাহিমেরও।