শেষ আপডেট: 7th December 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঋণের বোঝা যতটা হোক নামিয়ে খুব তাড়াতাড়ি ফিরতে চায় জেট এয়ারওয়েজ। সংস্থার নতুক মালিক মুরালিলাল জালান ও ফ্লোরিয়ান ফ্লিটজ গ্রুপের তরফে জানানো হয়েছে, বাজারে যা ধারবাকি আছে তার বেশ খানিকটা শোধ করে উড়ান শুরু করা হবে আগামী বছরের মাঝামাঝি। একবার উড়ান চালু হয়ে গেলে বাকি ধার শোধ হয়ে যাবে আগামী তিন-চার বছরের মধ্যেই। জেটের হারিয়ে যাওয়া গৌরব ফেরাতে জেট ২.০ প্রোগ্রাম শুরু করেছে ফ্লিটজ গ্রুপ। পরিষেবা চালুর জন্য পরিকল্পনাও তৈরি হয়ে গেছে। এতদিন ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক উড়ানে যে যে পরিষেবা বন্ধ ছিল তা আবার ফিরিয়ে আনা হবে। জেটের হাতে এখন ৬টি বিমান রয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে জোট বেঁধে আরও ১২০টি বিমান নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক ভিতও আরও মজবুত হবে। গত বছর এপ্রিল থেকেই সব উড়ান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে জেট এয়ারওয়েজ। তার আগে ওই সংস্থা ঋণদাতাদের কাছে আপৎকালীন তহবিলের জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বে এক কনসর্টিয়াম সেই আর্জি নাকচ করে দেয়। তারপরে উড়ান বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া জেটের সামনে আর কোনও উপায় ছিল না। একসময় ভারতে বিমান পরিবহণ ব্যবসার ১৩.৯ শতাংশ ছিল জেটের দখলে। এই সংস্থা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বিকাশশীল কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি। জেট দেশের অভ্যন্তরে ছাড়াও লন্ডন ও সিঙ্গাপুরেও বিমান চালাত। একুশ শতকের প্রথম দশকের মাঝামাঝি দেশে আরও কয়েকটি সস্তার এয়ারলাইনস চালু হয়। তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে জেট। ক্রমশ ঋণে ডুবে যায় সংস্থা। শিল্পপতি নরেশ গোয়েল প্রতিষ্ঠিত জেট এয়ারওয়েজের ঋণের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকা। অনেকে বলেন, জেট এয়ারওয়েজের সংকটের শুরু ২০০৬ সাল থেকে। ওই বছর জেট ৫০ কোটি ডলার দিয়ে এয়ার সাহারা কিনে নেয়। নরেশ গোয়েলের ব্যবসার কয়েকজন অংশীদার তাঁকে অত দাম দিয়ে এয়ার সাহারা কিনতে বারণ করেছিলেন। অভিযোগ ওঠে, নরেশ গোয়েল সব সিদ্ধান্ত একা নিতেন। আর কারও মতামত গ্রাহ্য করতেন না। তিনি একের পর এক ভুল করে জেট এয়ারওয়েজকে ডুবিয়েছেন। স্পাইস জেট, ইন্ডিগো, গো-এয়ারের মতো কম খরচের উড়ানগুলি যে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, সেদিকে জেট লক্ষ রাখেনি। তারা কর্পোরেট সেক্টরের ওপরেই পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছে। এইভাবে ক্রমশ পতন ঘনিয়ে এসেছে জেট এয়ারওয়েজের।