শেষ আপডেট: 6th December 2024 18:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পশ্চিমবঙ্গের তদন্তের ইতিহাসে জয়নগর মামলার তদন্ত ও বিচারকে 'নজিরবিহীন' বলে দাবি করছে পুলিশ। সে দাবিকে খারিজ করে দিতে পারছে না কোনও মহলই। কারণ নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের মতো ঘটনায় মাত্র ৬২ দিনের মাথায় সাজা ঘোষণা, আক্ষরিক অর্থেই বেনজির।
তিনটি ধারায় মুস্তাকিনকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে। বাকি একটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে পকসো আদালত। ঠিক কোন কোন ধারায় ফাঁসির সাজা ঘোষণা হয়েছে?
পকসো ধারা নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের জন্য। বিচারক ৬ পকসো আইনে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এরপর রয়েছে নাবালিকাকে খুনের দায়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ ধারা, যা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা ছিল। ১২ বছরের নীচে নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের দায়ে ৬৬ ধারায় সাজা ঘোষণা হয়েছে।
মৃত নাবালিকার পরিবারের হয়ে এদিন সওয়াল করেন আইনজীবী সুব্রত সর্দার। তিনি জানান, তিনটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও আরও একাধিক ধারায় সাজা ঘোষণা করেছেন বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। মৃত নাবালিকার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রাজ্য সরকারের কৌসুলি জানান, 'রাজ্য সরকারের তরফে বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা বলে সওয়াল করা হয়। আদালতও তা মেনে নিয়েছে। তিনটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর অপহরণের জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এবং প্রমাণ লোপাটের জন্য ৭ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।'
এত দ্রুত ও তৎপর তদন্ত এবং সেই সঙ্গেই নাতিদীর্ঘ বিচার শেষে সাজা ঘোষণা—ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় বিরলই বলা চলে। এর আগে সারা দেশেই এই ধরনের বহু মামলার দীর্ঘসূত্রিতা বারবার সমালোচনার মুখে পড়েছে। এমনকি গোটা দেশকে নাড়িয়ে দেওয়া নির্ভয়া কাণ্ডের সময়েও 'তারিখ পে তারিখ' ঘোষণার ক্ষোভ মানুষের মুখে মুখে ঘুরত।
জয়নগরের আজকের রায় যেন এই সব কিছুর একটা বড় উত্তর হিসেবে পৌঁছল মানুষের কাছে। বার্তা দিল, বিচার মোটেও অধরা নয়। অপরাধের শাস্তি সময়েই মেলে। দরকার শুধু তৎপরতা।