শেষ আপডেট: 20th July 2024 12:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুখে মাস্ক পরেও শেষরক্ষা হল না। সেই মাস্কই ধরিয়ে দিল সোনারপুরের কুখ্যাত দুষ্কৃতী জামালউদ্দিন সর্দারকে।
মঙ্গলবার ১৬ই জুলাই দুপুরেই গ্রেফতারির আশঙ্কায় বাড়ি ছেড়েছিল জামাল ৷ সন্ধের দিকে পাঁচিল টপকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল জামালের স্ত্রী ও ছেলেও ৷ ওইদিন ঘুটিয়ারি শরিফ এলাকায় শ্বশুরবাড়ির কাছে কোথাও থাকার পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু পুলিশ ঘোরাঘুরি করছে টের জঙ্গলের মধ্যে রাত কাটায় জামাল ৷ বুধবার ভোরে আলো ফুটতেই মাস্ক মুখে দিয়ে ঘুটিয়ারি শরিফ স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে সোনারপুরের উপর দিয়েই বিধাননগর স্টেশনে নেমে বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় এক পরিচিতের বাড়ি যায়। বুধবারটা সেখানেই কাটায়।
পুলিশসূত্রে খবর দিনভরই বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে খবর সম্প্রচারের উপর নজর রেখেছিল সে। সবকিছু দেখে আত্মসমর্পণের কথাও মাথায় আসে ৷ এইকারণে বৃহস্পতিবার ফের সোনারপুর থানার কাছাকাছি মিলনপল্লী এলাকায় চলেও যায় ৷ কথা বলে আইনজীবীর সঙ্গে। সূত্রের খবর, আইনজীবীই তাকে আত্মসমর্পণ করতে বারণ করায় সে গা ঢাকা দেয়। এরইমধ্যে নিজের ফোন পরিবর্তন করে নতুন সিম নেয় ৷ স্ত্রী ও সন্তানকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার পরিকল্পনা করে শাশুড়িকে ফোন করে জামাল।
এই ফোনই কাল হয় তার৷ পুলিশসূত্রে খবর এরপরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার শালাকে তুলে আনে সোনারপুর থানার পুলিশ ৷ যদিও বৃহস্পতিবার রাতে ডানকুনি এলাকায় তার এক পরিচিতের বাড়িতে থাকে জামাল ৷ শুক্রবার স্ত্রী ও সন্তানকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার ব্যবস্থা করে আগামী অন্তত ৬ মাসের জন্য আত্মগোপন করার পরিকল্পনা করে ফেলে ৷ পুলিশের তৎপরতায় তার সেই পরিকল্পনা অবশ্য জলে গেল। শুক্রবার সন্ধে সাতটা নাগাদ বাসন্তী হাইওয়ে থেকে সোনারপুর আসার রাস্তায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ মাস্ক পরে থাকাটাই কাল হয় জামালের ৷ তাতেই পুলিশের সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। তাকে চিহ্নিত করতে আর অসুবিধা হয়নি পুলিশের।
জামালকে গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম তৈরি করা হয়েছিল ৷ সোনারপুর থানার আইসি আশিস দাসের নেতৃত্বে একটি টিম শুক্রবার সারাদিন নানান জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় ৷ অভিযান চালায় বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের আরও একটি টিম। শেষপর্যন্ত অবশ্য সোনারপুর থানার টিমটিই তাকে গ্রেফতার করে। জামালের গ্রেফতারির পর বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি জানান, জামালের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগেরই তদন্ত করা হবে ৷
সোনারপুরের ত্রাস জামালউদ্দিন সর্দারের বিরুদ্ধে সালিশি সভায় মহিলার পায়ে শিকল বেঁধে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে ৭ জুলাই সোনারপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই প্রথম নয়, জামালউদ্দিন এর আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এলাকার অনেকের জমি জোর করে দখল করে নিয়েছে সে। প্রতিবাদ করলেই অমানুষিক নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়েছে।