শেষ আপডেট: 7th December 2023 17:27
চার মাস আগের ঘটনা। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরের বাইরে তুমুল তর্কাতর্কি বেধেছিল দুই মন্ত্রীর মধ্যে। বাবুল সুপ্রিয় ও ইন্দ্রনীল সেন। বাবুল সুপ্রিয় তখন পর্যটন মন্ত্রী। ইন্দ্রনীল সেই সময়ে তথ্য ও সংস্কৃতি ও কারিগরি শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী। ইন্দ্রনীলের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বাবুল বলেছিলেন,“তুমি আমার দফতরের কাজ আটকাচ্ছো কেন?" জবাবে ইন্দ্রনীল বলেন, “তোর যা বলার তুই দিদিকে গিয়ে বল।”
তার কিছুদিন পর আবার দেখা যায় বাবুলকে পর্যটন দফতরের দায়িত্ব থেকেই সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে তুলনামূলক ভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ ‘অচিরাচরিত শক্তি উৎস’ দফতরে পাঠিয়ে দেন মমতা। পরিবর্তে পর্যটনে ফেরান ইন্দ্রনীলকে।
এ ঘটনার পর থেকে দুই মন্ত্রীর মধ্যে কী চলছিল, তা অনেকেই আন্দাজ করতে পারছিলেন। বাবুলের ঘনিষ্ঠদের ধারণা তাঁর সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কান ভাঙিয়েছেন ইন্দ্রনীলই। আবার ইন্দ্রনীলের ঘনিষ্ঠরা দাবি করছিলেন, বাবুলের কাজে সন্তুষ্ট নন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রায় টানা চার মাস এই টানাপোড়েন চলার পর অবশেষে দ্বন্দ্বে ইতি টানলেন দুজনেই। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় দেখা যায়, অধিবেশন কক্ষের মধ্যে বাবুল ও ইন্দ্রনীলকে দু’পাশে নিয়েছেন অরূপ বিশ্বাস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্ত্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলের বিয়েতে ফিরহাদ হাকিম কার্শিয়ংয়ে আমন্ত্রণ পেয়েছেন। তিনি গিয়েছেন। অরূপ ছিলেন কলকাতাতেই।
দেখা যায়, অরূপ একবার বাবুল, আর একবার ইন্দ্রনীলের সঙ্গে কথা বলছেন। রাজ্য মন্ত্রিসভায় অরূপ ও ইন্দ্রনীলের বন্ধু সম্পর্ক সুবিদিত। দুজনের খুনসুটির সম্পর্ক। এমনকী ইন্দ্রনীল প্যান্ট না কেচে পরেন বলে একবার মুখ্যমন্ত্রীকে মজা করে জানিয়েছিলেন অরূপ।
অরূপ যখন বাবুল ও ইন্দ্রনীলের সঙ্গে কথা বলছেন, তখন দেখা যায় পিছনের বেঞ্চে বসে তা শোনার চেষ্টা করছেন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ব্রাত্যর মুখে হাসিও দেখা যায়।
এর কিছুক্ষণ পর অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিন জনই। তার পর বিধানসভায় বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ঘরে তিন জনের আড্ডা চলে। ইন্দ্রনীলের কাঁধে হাত দিয়ে ফটো তুলতে দেখা যায় বাবুলকে।
বিধানসভায় তিন মন্ত্রী এই আড্ডা ও সখ্যের ছবিটা ইতিবাচক। রাজনীতিতে আসলে চিরস্থায়ী দ্বন্দ্ব থাকে না। সখ্যও যে চিরস্থায়ী হয় তাও নয়।