শেষ আপডেট: 27th March 2024 16:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশে কর্মহীনদের মধ্যে ৮৩ শতাংশই হল যুবসমাজ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের ২০২৪ সালের রিপোর্টে এই বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন বেকারি দূরীকরণ, আত্মনির্ভর ভারত নিয়ে গালভরা প্রচার করছেন লোকসভা ভোটের আগে, সেই সময় এই রিপোর্ট দেশের কর্মহীনতার কঙ্কালসার চেহারাটি তুলে ধরল। সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, কর্মহীনদের মধ্যে শিক্ষিত যুবসমাজের সংখ্যা হু-হু করে বেড়েছে। ২০০০ সালে শিক্ষিত যুবকদের ৫৪ শতাংশ ছিলেন কর্মহীন। ২০২২ সাল পর্যন্ত তা বেড়ে হয়েছে ৬৬ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন এবং ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট যৌথভাবে সমীক্ষাটি চালায়। চিফ ইকনমিক অ্যাডভাইজার ভি অনন্ত নাগেশ্বরন ইন্ডিয়া এমপ্লয়মেন্ট রিপোর্ট ২০২৪ প্রকাশ করেন। তাতে জানা গিয়েছে, বর্তমানে শিক্ষিত কর্মহীন যুবদের মধ্যে পুরুষের (৬২.২ শতাংশ) তুলনায় মেয়েদের (৭৬.৭ শতাংশ) সংখ্যা বেশি।
রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়েছে, ভারতে বেকারিত্ব ক্রমবর্ধমান সে বিষয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। বিশেষত যুব সমাজ শিক্ষিত হয়েও কর্মহীন রয়েছে। শহর এলাকায় শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা গ্রামীণ এলাকার তুলনায় বেশি। গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে যে, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কর্মরত এবং কর্মহীন যুবদের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেছে। কিন্তু তা কমেছে কোভিড অতিমারির সময়। ২০০০ সালে কর্মরত যুবদের অর্ধেক স্বনিযুক্ত ছিলেন। মাত্র ১৩ শতাংশ চাকরি করতেন এবং ৩৭ শতাংশ অস্থায়ী কাজে নিযুক্ত ছিলেন। ২০১২তে সেটা ছিল ৪৬, ২১, ৩৩ শতাংশ। ২০১৯ সালে ৪২, ৩২, ২৬ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৪৭, ২৮ ও ২৫ শতাংশ হয়।
সমীক্ষার মন্তব্য, আগামী দশকের মধ্যে দেশের ৭০-৮০ লক্ষ যুব শ্রমিকের কাজে করতে বাধ্য হবে। একইসঙ্গে পাঁচটি চাবিকাঠিও উল্লেখ করা হয়েছে সমীক্ষায়। সেগুলি হল, চাকরির ক্ষেত্র বৃদ্ধি, কর্মের দক্ষতা বৃদ্ধি, শ্রমবাজারে অসাম্য দূর করা, দক্ষ শ্রমিক ও শ্রমনীতির রূপায়ণ এবং শ্রমবাজারের কাঠামো ও যুব কর্মীর সেতুবন্ধনের ব্যাপারে অজ্ঞতা কাটিয়ে তোলা।
নাগেশ্বরন আরও বলেন, প্রতিটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যায় সরকার উদ্যোগ নেবে, একথা মাথায় আনা ঠিক নয়। আমাদের এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। এই রিপোর্ট প্রকাশ হতেই নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তুলোধনা করতে লেগেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে বুধবার এক্সবার্তায় বলেছেন, মোদী সরকারের ব্যর্থতার কুফল ভুগছে দেশের যুবসমাজ। সরকার তাঁদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিয়েছে। রিপোর্টই বলছে, কর্মহীনতার সমস্যা ভারতের সামনে গভীর সঙ্কট ডেকে এনেছে।
তৃণমূলের রাজ্যসভা সদস্য সাগরিকা ঘোষও ফুসে উঠেছেন রিপোর্টে ব্যাপারে। নাগেশ্বরনের হাত গুটিয়ে নেওয়া মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এক্সে লিখেছেন, মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলছেন, বেকারির সমস্যা মেটাতে সরকারের কিছু করার নেই। মোদী কি গ্যারান্টি হল স্বপ্নো কি গ্যারান্টি। এখানে শুধু স্বপ্ন ফেরি করা হয়, তার বেশি কিছু নয়।