দ্য ওয়াল ব্যুরো : আমি একটু আগে আমার বান্ধবীকে খুন করেছি। ব্রিটেনের রাস্তায় পুলিশকে থামিয়ে এমনই বলেছিল এক যুবক। খুনের অভিযোগে গত বুধবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল সেই যুবকের। ২৮ বছর তাকে জেলে কাটাতে হবে। তাঁর নাম জিগুকুমার সোরথি। বয়স ২৩। সে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। যে মেয়েটিকে সে খুন করেছে, তাঁর নাম ভাবিনী প্রবীণ। তার বয়স ছিল ২১।
পুলিশ জানিয়েছে, ভাবিনীর বাড়ি ছিল লেইসেস্টার শহরে। ২ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় জিগুকুমার তার বাড়িতে যায়। সামান্য দু'-এককথার পরেই সে ছুরি বার করে ভাবিনীকে আঘাত করে। মেয়েটি সেখানেই মারা যায়। তার ঘণ্টাদু'য়েক পরে সে রাস্তায় পুলিশকে থামিয়ে অপরাধের কথা স্বীকার করে।
বিচারক টিমোথি স্পেনসার বলেন, "নিষ্ঠুরভাবে মেয়েটিকে খুন করা হয়েছে। সে ছিল ট্যালেন্টেড মেয়ে। তার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর।" সেপ্টেম্বরের শুরুতে জিগুকুমার জুরিদের বলে, ভাবিনীকে সে বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু ভাবিনী রাজি হয়নি। তাই সে অপমানিত বোধ করেছিল।
ভাবিনী প্রবীণের দেহের ময়না তদন্তে দেখা যায়, ছুরির অনেকগুলি আঘাতের ফলে তাঁর মৃত্যু ঘটেছে। ডিটেকটিভ ইনস্পেকটর কেনি হেনরি বলেন, "ভাবিনীর ছিল শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। পিতামাতার আদরের সন্তান ছিল সে।" পরে তিনি বলেন, "এত অল্প বয়সে ভাবিনীর মৃত্যু তার পরিবার মেনে নিতে পারছে না। সারা জীবনই তাঁদের এই ট্রাজিক ঘটনার স্মৃতি বহন করে চলতে হবে।"
ডিটেকটিভ ইন্সপেকটর বলেন, ভাবিনী খুনের মামলা চলার সময় আদালতে উপস্থিত থাকা তার পরিবারের পক্ষে যন্ত্রণাদায়ক। বিচারপর্বে তাঁরা যে সাহস দেখিয়েছেন, আমি তার প্রশংসা করি। ভাবিনীকে কোনভাবেই ফিরিয়ে আনা যাবে না। কিন্তু তার খুনির শাস্তি হলে পরিবারের লোক স্বান্তনা পেতে পারে।
লেইসেস্টার মার্কারি সংবাদপত্রের রিপোর্টে বলা হয়েছে, জিগুকুমারের সঙ্গে ভাবিনীর আলাপ ছিল বহুদিন ধরে। লেইসেস্টারে অবশ্য দু'জনে আলাদা থাকত। সম্প্রতি তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। ভাবিনী শেষপর্যন্ত জিগুকুমারকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি।
সরকারি কৌঁসুলি লুসি বোলটার বলেন, "ভাবিনীর জীবন অকালেই শেষ হয়ে গিয়েছে। নিজের বাড়িতেই নিষ্ঠুরভাবে খুন হয়েছে সে। পরিকল্পনামাফিক তাঁকে খুন করা হয়েছিল। সে বিষয়ে আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে।"