দ্য ওয়াল ব্যুরো : বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে চিন বিদ্বেষ। অনেকে ভাবছেন, চিনারাই এই মহামারীর জন্য দায়ী। গত শনিবার ইজরায়েলের তাইবেরিয়াস শহরে চিনা ভেবে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে। ওই ব্যক্তির নাম আম শালেম সিংসন। তিনি নেই মেনসে নামে এক আদিবাসী গোষ্ঠীর সদস্য। মণিপুর ও মিজোরামে ওই গোষ্ঠী বসবাস করে। সিংসন তিন বছর আগে ইজরায়েলে গিয়েছিলেন।
সিংসনের বয়স ২৮। বুকে গুরুতর আঘাত নিয়ে তিনি পোরিয়া হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ইজরায়েলের এক টিভি চ্যানেলে বলা হয়, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ শুনে পুলিশের ধারণা হয়েছে, মূলত দু'জন ওই যুবকের ওপরে আক্রমণের জন্য দায়ী। তাদের খোঁজ চলছে। সিংসন পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি আক্রমণকারীদের বোঝাতে চেষ্টা করেছিলেন, তাঁর কোভিড-১৯ রোগ হয়নি। তিনি চিনা নন। কিন্তু তারা শোনেনি।
শাভেই ইজরায়েল নামে এক সংস্থা ইজরায়েলে নেই মেনসে গোষ্ঠীর সদস্যদের অভিবাসনের ব্যবস্থা করে। সেই সংগঠনের চেয়ারম্যান মাইকেন ফ্রিউন্ড বলেন, "এই ধরনের জাতিবিদ্বেষী হামলা হবে, আমরা ভাবতেই পারিনি। আমি দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার করতে হবে।"
করোনাভাইরাস সংক্রমণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চিন। তারপরেই আছে ইতালি। সেদেশে রবিবার ৩৬৮ জনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের সংখ্যা এক ধাক্কায় ১৮০৯ হয়েছে। চিনের বাইরে এপর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে যতজনের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে অর্ধেকই ইতালিতে।
পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে উত্তর ইতালির নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন যে হাসপাতালে আর কোনও শয্যা খালি নেই এবং কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রও আর নেই। এই অবস্থায় ইস্টার উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী উৎসব স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভ্যাটিকান সিটি।
ভ্যাটিকান জানিয়েছে যে রবিবার তীর্থে যাওয়ার মতো করে খালি পায়ে ভ্যাটিকান ছেড়ে বেরিয়ে রোমের একটি ক্যাথিড্রালে প্রার্থনা করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি প্রার্থনা করেছেন যাতে করোনাভাইরাসের মতো মহামারীতে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন। ভ্যাটিকান থেকে একথা জানানো হয়েছে।
ইতালির পরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এখন ফ্রান্স ও স্পেনে। এই দুই দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাফে, দোকান ও রেস্তোরাঁ। অত্যাবশ্যকীয় ছাড়া সমস্ত রকম বাণিজ্যিক কাজকর্ম বন্ধ রাখার দিয়েছে ফ্রান্স। আরও একধাপ এগিয়ে স্পেন ঘোষণা করেছে যে কর্মস্থলে যাওয়া, চিকিৎসা করাতে যাওয়া ও খাবার কিনতে যাওয়া ছাড়া আর কোনও প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরনো চলবে না।
জার্মানিতেও করোনা আতঙ্ক ঢুকেছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে তারা ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, সুইৎজারল্যান্ড, লুক্সেমবুর্গ ও ডেনমার্কের সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছে।