শেষ আপডেট: 7th August 2023 15:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দিল্লি (Delhi) রাজ্য সরকারের হাত থেকে অফিসারদের ট্রান্সফার, পোস্টিংয়ের অধিকার কেন্দ্রীয় সরকার কেড়ে নিয়েছে। এই ব্যাপারে জারি করা অর্ডিন্যান্সটি গত সপ্তাহে লোকসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবার বিলটি রাজ্যসভায় (Rajya Sabha)পেশ করবেন। সোম ও মঙ্গলবার বিলের উপর বিতর্ক হবে। মঙ্গলবার হবে ভোটাভুটি।
সংসদে এই অর্ডিন্যান্স আটকে দিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিজেপি বিরোধী দলগুলির নেতা ও মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন (INDIA)। পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্য সফর করেন তিনি। কংগ্রেস গোড়ায় এই ইস্যুতে আপের পাশে থাকতে গড়মসি করায় বিরোধী জোটে কেজরিওয়ালের দল থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয়। বিরোধী ঐক্যের স্বার্থে কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। কেজরিওয়াল ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যসভায় বিজেপিকে হারিয়ে দিতে পারলে সেটা হবে ২০২৪-এর আগে বিরোধীদের সেমি ফাইনাল বিজয়।
কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা নেই। শাসক দল হেলায় বিলটি রাজ্যসভাতেও পাশ করিয়ে নেবে। অন্তত সভার অঙ্ক তাই বলছে। রাজ্যসভার ২৪৫ আসনের মধ্যে এখন শূন্য আসন আটটি। দেখা যাচ্ছে বিজেপি-সহ এনডিএ শরিক এবং জোটের বাইরে থাকা বিজু জনতা দল ও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সমর্থনের জোরে বিলের পক্ষে অন্তত ১১৯টি ভোট পড়তে পারে। অন্যদিকে, বিরোধী বাক্সে পড়তে পারে খুব বেশি হলে ১০৫ সদস্যের ভোট।
তারপরও রাজ্যসভায় দিল্লি অর্ডিন্যান্স বিতর্ককে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছে রাজনৈতিক মহল। আপ শাসিত দিল্লি সরকারের পাশে দাঁড়াতে শুধু কংগ্রেস নয়, বিরোধী শিবিরের অনেক দলেরই আপত্তি ছিল। কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা দিতেই অর্ডিন্যান্স বিরোধিতাকে হাতিয়ার করে সংসদে থাকা বেশিরভাগ বিরোধী দল একজোট হয়েছে। বিল নিয়ে বিতর্কে এবং ভোটাভুটিতে ঐক্যবদ্ধ জোটবার্তা তুলে ধরাই বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরের কাছে অগ্নিপরীক্ষা। লোকসভা ভোটের আগে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের বিরুদ্ধে এক সুরে কথা বলার এবারই শেষ সুযোগ। ভোটের আগে শুধু ফেব্রুয়ারি মাসে স্বল্প মেয়াদের অধিবেশন বসবে অন্তবর্তীকালীন বাজেট পাশ করাতে। সেখানে বিল পাশ বা অন্য কোনও ইস্যুতে বিতর্কের তেমন একটা সুযোগ নেই। সরকারপক্ষ সেই সুযোগ দেবে না।
রাজ্যসভায় বিজেপি-সহ এনডিএ শিবিরের সদস্য সংখ্যা ১০৩জন। বিজেপির আশা এক নির্দল এবং পাঁচ মনোনীত সাংসদের ভোট তারা পাবে। এছাড়া বিজু জনতা দল ও ওয়াইএসআর কংগ্রেসের নয়জন করে মোট ১৮ জন সাংসদ আছেন যাঁরা দলের সিদ্ধান্ত মতো বিলের পক্ষে ভোট দেবেন। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যথাক্রমে নবীন পট্টনায়েক এবং জগনমোহন রেড্ডির টেলিফোনে কথা হয়েছে। সব মিলিয়ে বিলের পক্ষে ভোট পড়তে পারে ১২৮টি। ফলে নির্দল এবং মনোনীতরা ভোটদানে বিরত বা বিরোধী পক্ষকে সমর্থন দিলেও বিলের পক্ষে ১১৯টি ভোট পড়বে।
অন্যদিকে, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের মোট সাংসদ সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১০৯ জন। তাঁদের মধ্যে কংগ্রেসের ৩১, তৃণমূলের ১৩, ডিএমকে-ক ১০ সাংসদ আছেন। আরজেডির সদস্য আছেন ছয়জন। সিপিএম এবং জনতা দল ইউনাটেডের আছে পাঁচজন করে সদস্য। তিনজন করে সাংসদ আছে এনসিপি-র (শরদ গোষ্ঠী) এবং শিবসেনার উদ্ধব গোষ্ঠীর হাতে। আম আদমি পার্টি তাদের রাজ্যসভার সাংসদদের সোমবার বেলা ১১’টার মধ্যে সংসদে হাজির হতে তিন লাইনের একটি হুইপ জারি করেছে। বিরোধী শিবির ইন্ডিয়া জোটের দিকে দেশবাসীর নজর থাকবে তারা ১০৫ সাংসদকে রাজ্যসভায় মঙ্গলবারের ভোটাভুটিতে হাজির করতে পারে কিনা।
রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ ফিরিয়ে দিলেন স্পিকার, অনাস্থা প্রস্তাবে অংশ নেওয়ায় বাধা রইল না