শেষ আপডেট: 25th August 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে নতুন করে সামরিক পরিকাঠামো গড়ে তুলছে চিন। অন্যদিকে, আকসাই চিন ও দৌলত বেগ ওল্ডির কাছেও লাল ফৌজের তৎপরতা লক্ষ করা গেছে। শীতের আগে লাদাখের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিরাপত্তা আরও মজবুত করার জন্য অতিরিক্ত ৩০ হাজার সেনা পাঠিয়েছে ভারত। প্রতিরক্ষা সূত্রে খবর, ভারতীয় সেনার শক্তি বাড়াতে ইগলা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করা হয়েছে। জওয়ানদের কাঁধে থাকবে এই বিশেষ ধরণের মিসাইল সিস্টেম, যার থেকে শত্রু শিবিরে নিপুণ নিশানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা যাবে।
ইগলা হল রাশিয়ার প্রযুক্তিতে তৈরি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এই অস্ত্র নিয়ে কাঁধে নিয়েই চালাতে পারেন সেনা জওয়ানরা। ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনা এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে। সেনা ঘাঁটির কাছাকাছি শত্রুপক্ষের অ্যাটাক কপ্টার বা যুদ্ধবিমান চলে এলে খুব তাড়াতাড়ি প্রতিপক্ষকে ঠেকাতে ইগলা ব্যবহার করেন সেনারা। এই সিস্টেম কাঁধে নিয়েই নিখুঁত টার্গেট করা যায় প্রতিপক্ষের ফাইটার জেট বা কপ্টারকে।
মুখোমুখি শত্রু বাহিনীর উপর যেমন আক্রমণ করা যায় তেমনি ভূমি থেকে আকাশেও মিসাইল ছোঁড়া যায় এই সিস্টেমে। পোর্টেবল এবং জওয়ানরা কাঁধেই বয়ে নিয়ে যেতে পারেন এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম।
১৯৮১ সাল থেকে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে রয়েছে ইগলা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। সেই সময় এর ৯কে৩১০ ইগলা-১ ভ্যারিয়ান্ট ব্যবহার করতেন রুশ সেনারা। পরে ২০০৪ সালে ইগলা-এস ‘ম্যান-পোর্টেবল’ মিসাইল সিস্টেম তৈরি করা হয়। ২০১৪ সাল পর্যন্ত ইগলা সিস্টেমের ৯কে৩৩৩ ভার্বা ভ্যারিয়ান্ট ব্যবহার করেছে রুশ বাহিনী।
ইগলা-এস মিসাইল অনেক উন্নত। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেন, নতুন প্রজন্মের ম্যান-পোর্টেবল মিসাইল সিস্টেম যার থেকে ৯এস৩৪২ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা যায়। রাতের অন্ধকারে শত্রুপক্ষের হামলা হলেও এই মিসাইল সিস্টেমে সঠিক নিশানা লাগানো যায়। নাইট-ফায়ারিং এর জন্য বিশেষ ডিভাইসও আছে এই সিস্টেমে। ১৯৯২ সালে এই ইগলা মিসাইল ছুড়েই ভারতের সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালাতে আসা পাকিস্তানের হেলিকপ্টার উড়িয়ে দিয়েছিল সেনারা।
ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত দু’দিন আগেই বলেছিলেন লাদাখে যতই সেনা ও সামরিক বহর বাড়াক চিন, ভারতীয় নিয়্ন্ত্রণাধীন এলাকায় ঢুকতে এলে ছেড়ে কথা বলবে না সেনাবাহিনী। পূর্ব লাদাখের পাহাড়ি এলাকায় যেমন ভারতের মাউন্টেন ফোর্স তৈরি আছে তেমনি শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স নিয়ে তৈরি বায়ুসেনাও। রাতের বেলা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কড়া নজরদারির জন্য পাঠানো হচ্ছে ফ্রান্স থেকে কেনা পাঁচটি রাফাল যুদ্ধবিমানকে। রাফাল পৌঁছনোর আগে ভারতের তৈরি দুটি লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টারকে সীমান্তে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, পাক সীমান্তেও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনা। ইতিমধ্যেই ক্ষিপ্র গতির লাইট কমব্যাট তেজস যুদ্ধবিমান নামানো হয়েছে ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টে।
লাদাখে ইতিমধ্যেই কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস টু এয়ার মিসাইল মোতায়েন করেছে ভারত। দৌলত বেগ ওল্ডির কাছে নামানো হয়েছে রাশিয়ার থেকে কেনা অত্যাধুনিক টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক। সীমান্তে চিনের মোকাবিলায় আমেরিকার থেকে কেনা আলট্রা-লাইট হাউইৎজার কামান মোতায়েন করেছে ভারত। চিনা গতিবিধি নজরে রাখতে টহল দিচ্ছে ভারতের লড়াকু বিমান সুখোই-৩০, মিগ-২৯ ফাইটার জেটের নয়া ভার্সন, মিরাজ-২০০০ ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট। অন্যদিকে শক্তিশালী অ্যাটাক হেলিকপ্টার অ্যাপাচে এএইচ-৬৪ই, সিএইচ-৪৭ এফ চিনুক মাল্টি-মিশন হেলিকপ্টারও নামিয়েছে বায়ুসেনা। সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে নামানো হয়েছে নৌসেনার পি-৮১ বিমান। ইজরায়েল থেকে কেনা সশস্ত্র হেরন ড্রোন উড়িয়েছে ভারত।