দ্য ওয়াল ব্যুরো : শনিবার পথনিরাপত্তা নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্বে যত গাড়ি চলাচল করে, তার মাত্র এক শতাংশ আছে ভারতে। কিন্তু পথ দুর্ঘটনায় বিশ্বে যত মানুষ হতাহত হন, তাঁদের ১০ শতাংশ ভারতের মানুষ। একইসঙ্গে বিশ্ব ব্যাঙ্কের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শাফার বলেন, পথনিরাপত্তার জন্য গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার।
হার্টউইগ শাফারের কথায়, "ভারতের ক্ষেত্রে বলা যায়, সেখানে বিশ্বের মাত্র এক শতাংশ গাড়ি আছে। অথচ বিশ্বে যত মানুষ পথদুর্ঘটনার শিকার হন, তাঁদের ১০ শতাংশ ভারতের বাসিন্দা।" এদিন নয়াদিল্লিতে ওই রিপোর্ট প্রকাশ করেন শাফার। তিনি বলেন, গত বছর সকলের মনোযোগ ছিল কোভিড অতিমহামারীর দিকে। এবছর দেখা যাচ্ছে, অতিমহামারী ও পথনিরাপত্তার মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে। তাঁর কথায়, "দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, পথদুর্ঘটনার সংখ্যা কমছে না। দেশের হাসপাতালগুলিতে যত সিট আছে, তার ১০ শতাংশে পথদুর্ঘটনার শিকারদের চিকিৎসা হয়।" বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে বলা হয়েছে, জনগণের সবচেয়ে দরিদ্র অংশই পথদুর্ঘটনার শিকার হন বেশি।
শাফার বলেন, "দরিদ্র পরিবারের কেউ পথ দুর্ঘটনার শিকার হলে তাঁদের আর্থিক অবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়। তুলনায় স্বচ্ছল পরিবারের কেউ দুর্ঘটনার শিকার হলে আর্থিক অবস্থার ক্ষতি হয় কম। পুরুষদের তুলনায় মহিলারা দুর্ঘটনার শিকার হলে পরিবারের ক্ষতি হয় বেশি। যাঁরা হেঁটে যাতায়াত করেন এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন, তাঁরাই পথদুর্ঘটনার শিকার হন বেশি।"
গতবছর ভারত সরকার মোটর ভেহিকেল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট সংশোধন করে। পথদুর্ঘটনা কমানোর জন্য ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এক প্রশ্নের জবাবে শাফার জানান, তামিলনাড়ু সরকার পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা ২৫ শতাংশ কমাতে পেরেছে।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের দক্ষিণ এশিয়া শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট জানান, তাঁরা বিভিন্ন দেশে পথ নিরাপত্তা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্য নিরাপদ পরিকাঠামো গড়ে তোলা দরকার। তাঁর কথায়, "আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে পথের ধারে যথেষ্ট সংখ্যক ব্যারিয়ার থাকে। কোনও কোনও জায়গায় ট্রাফিকের গতি কমাতে হবে। রাস্তা নিরাপদ হওয়া চাই। গাড়িগুলিও নিরাপদ হওয়া চাই।"
পরে তিনি বলেন, "কোনও গাড়ি তৈরি হওয়ার পরে দেখতে হবে, তাতে নিরাপত্তার যথেষ্ট ব্যবস্থা আছে কিনা। গাড়িতে নিরাপত্তা না থাকলে পথদুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।" বিশ্ব ব্যাঙ্কের মতে, হাইওয়ের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকা উচিত।