মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: 5 May 2025 14:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) স্পষ্ট বললেন, হিংসার যে ঘটনা ঘটেছে তা পূর্বপরিকল্পিত। ধর্মের নামে কেউ কেউ ভুল কথা প্রচার করছে। তার জন্য মানুষ প্ররোচিত হচ্ছে। সেই কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। মমতার কথায়, মুর্শিদাবাদের আসল সত্য দ্রুত সামনে আসবে।
ওয়াকফ ইস্যুতে জেলায় তুমুল বিক্ষোভ হয়েছিল। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা থেকে শুরু করে পুলিশের গাড়িতে হামলা, ঘর-বাড়ি ভাঙচুর, খুন... সব ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল মুর্শিদাবাদ। অশান্তির পরিস্থিতির মধ্যেই জেলা পরিদর্শনে এসেছিল জাতীয় মানবাধিকার, মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। গেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। কিন্তু সেই সময়ে মুর্শিদাবাদে যাননি মমতা। সোমবার জেলায় গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুললেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য একাধিক রাজ্যে নানা ঘটনা ঘটে। মণিপুর, রাজস্থান, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রের কোনও প্রতিনিধি যায়নি। তবে বাংলায় কিছু হলেই কেন একদিনের মধ্যেই সব চলে আসে, প্রশ্ন তাঁর। এই পরিপ্রেক্ষিতেই মমতার সাফ অভিযোগ, ''একেবার পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটনা হয়েছে। ধর্মের নামে কিছু বহিরাগতরা ভুল কথা ছড়িয়েছে। আর কিছু লোক প্ররোচিত হওয়ার ফলে এক গোষ্ঠীর সঙ্গে অন্য গোষ্ঠীর গন্ডগোল লেগেছে।'' যারা এই হিংসার ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁদের উদ্দেশে মমতার কড়া হুঁশিয়ারি, ''বাংলার মানুষ এসব বরদাস্ত করবে না।''
মুর্শিদাবাদের ঘটনা একটা বড় চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, তিনি কারও বিপক্ষে নন তবে ষড়যন্ত্র, দাঙ্গার বিরুদ্ধে। সাফ কথা, যারা দাঙ্গা লাগায় তারা বাংলার শত্রু। তিনি খোঁজ নিয়েছেন কারা মুর্শিদাবাদের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন। তাদের শাস্তি হবে, আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপিকে নিশানা করে তাঁর আরও সংযোজন, যারা হিংসার ঘটনায়, সাম্প্রদায়িক হিংসায় যুক্ত থাকে তাদের তিনি অপরাধী বলেই মনে করেন।
কোনও কোনও সংগঠন পরিস্থিতির ফায়দা নিয়ে হিংসা ছড়ায় বলে অভিযোগ করেন মমতা। তাঁর কটাক্ষ, কেউ কেউ ধর্মের নাম করে নিজেদের বড় নেতা মনে করে। রাজ্য সরকার কখনই কোনও রকম হিংসাকে প্রশ্রয় দেয় না। তবে কোনও সংগঠন এমন কাজ করলে তার দায় সরকারের নয়। স্পষ্ট জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুর্শিদাবাদের নিহত পিতা-পুত্রের পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণের ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের। কিন্তু বিজেপির তরফে আগেই নিরাপত্তার ইস্যু দেখিয়ে তাঁদের জেলা থেকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। মমতার প্রশ্ন, ''এটা কি অপহরণের ঘটনা নয়? আমরা এসে ক্ষতিপূরণেরই টাকা দিতাম। তার আগেই তুলে নিয়ে চলে যাওয়া হল।''
যদিও মমতা আগেই জানিয়েছিলেন, মুর্শিদাবাদে গিয়ে হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। যারা আছে তাঁদের সঙ্গেই কথা বলবেন তিনি। ক্ষতিপূরণের টাকাও দেওয়া হবে। তবে কেউ তা না-নিলে তাঁর কিছু করার নেই।