শেষ আপডেট: 8th March 2025 15:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে বীরভূমের দেউচা পাচামিতে (Deucha Pachami) কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরুর কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের ঘোষণা মেনে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরুও হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়দের একাংশ নতুন করে বাধা দেওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে ফের বন্ধ হয়েছিল কয়লা উত্তোলনের কাজ।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতি ও শুক্রবার, দুদিন ধরে প্রশাসনিক কর্তারা গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। যাঁরা এখনও ক্ষতিপূরণ ও চাকরি পাননি দ্রুত তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলও। তাঁর উপস্থিতিতেই আপাতত জট কেটেছে, গ্রামবাসীরা আবার কাজ শুরু করেছেন বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
এ ব্যাপারে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, চাঁদা মৌজার তিনজায়গায় সমস্যা তৈরি হয়েছিল। আসলে বাইরের লোকেরা উসকানি দিয়ে কাজ বন্ধ করেছিল। পরে স্থানীয়রা আবার কাজ শুরু করেছেন।
বিরোধীদের নিশানা করে অনুব্রত এও বলেন, "দেউচা পাচামির কাজ সম্পূর্ণ হলে রাজ্যের চেহারা বদলে যাবে। এটা অনেকে চান না, তাই মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।" বিজিবিএসের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়েছিলেন, দেউচা পাচামিতে যা কয়লা রয়েছে, তাতে আগামী ১০০ বছর বিদ্যুতের খামতি থাকবে না রাজ্যে।
দেউচা পাচামি নিয়ে বহু দিন ধরেই ঝামেলা চলছে পশ্চিমবঙ্গে। ১৯৯৩-৯৫ সালে, বাম শাসনের আমলে দেউচা পাচামি-সহ তিনটি কয়লা ব্লক বণ্টন করা হয়েছিল আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপকে। তবে সরকারি তরফে ব্লক পেলেও, উত্তোলনের পরিবেশ গড়ে তোলা যায়নি বহু বছর ধরে। পরবর্তীকালে এই দেউচা পাচামি কয়লা খনি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ভীষণই আগ্রহী হয়ে ওঠেন। শিল্প মহল সূত্রে শোনা যায়, কেবল গোয়েঙ্কা নয়, ওই খনি নিয়ে আগ্রহ রয়েছে আদানি শিল্পগোষ্ঠীরও।
বিস্তর টানাপড়েনের পরে অবশেষে স্থানীয়দের রোষ প্রশমিত করে, গত বছর থেকেই ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া শুরু হয় জমিদাতাদের এর পরে জানুয়ারিতে নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে দেউচা পাচামি প্রকল্পের কাজ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভরা বৈঠকে জেলাশাসকের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়েছিলেন, ‘দেউচা পাচামির জন্য যখন জমি নেওয়া হল কেন খাপছাড়া ভাবে নেওয়া হল? কেন কনটিগুইটি দেখা হল না?'
মুখ্যমন্ত্রীর ওই ধমকের পরই নড়ে বসে রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তারা। সশরীরে বোলপুরে পৌঁছন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। সেখান থেকে মহম্মদবাজার বিডিও অফিসে পৌঁছে বীরভূমের জেলাশাসক, জেলা সভাপতি এবং ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলেন মুখ্যসচিব এবং ডিজি।
ফের সমস্যা তৈরি হওয়ায় গ্রামে গিয়েছিলেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। তাঁরা গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করেছেন, অন্যদের মতো বাকিদেরও শীঘ্রই ক্ষতিপূরণ ও চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।