শেষ আপডেট: 4th January 2025 19:32
একটা সময় ছিল যখন টাইপরাইটের খট খট শব্দে সারাদিন গম গম করত আদালত ও ডিএম অফিস চত্বর। কাজ থাকত একাধিক। কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ায় টাইপরাইটের কাজ কমেছে। বয়স হয়েছে এই পেশার। পরিচিত সেই আওয়াজ আজ ভুলতে বসেছেন মানুষজন।
তিরিশ, চল্লিশ বছর ধরে বর্ধমান আদালত চত্বরে টাইপিস্টের কাজ করছেন সিধু-শঙ্কুরা। আগে আদালত খোলার আগেই তাঁদের পসরা জমে উঠত চত্বরে। আদালতের কাগজ হাতে তাঁদের সামনে ভিড় জমাতেন অনেকেই। তাঁদের ছাড়া চলত না অর্ধেক কাজ। কিন্তু এখন সবটাই অতীত। আগের ফরম্যাটে কাজও হয় না। কম্পিউটার, ফোটোকপি মেশিনের জগতে ধুঁকছে এই পেশা। তাই এক অসম লড়াই চালাতে হচ্ছে সিধু-শঙ্কুদের।
এবিষয়ে টাইপিস্ট সিধু মণ্ডল বলেন, 'অবস্থা ভাল নয়। কম্পিউটার এসে যাওয়ায় টাইপের বাজার পড়ে গেছে। নতুন প্রজন্ম কেউ আসছে না। আমি ২৪ বছর হল টাইপ করছি। আমাদের জেনারেশনই শেষ। আমরা শেডের দাবি বহুদিন ধরে জানাচ্ছি। সরকার সাহায্য করলে উপকার হয়।'
আরেক টাইপিস্ট শঙ্কু ঘোষ দস্তিদারের আক্ষেপ, 'টাইপের একটা সময় রমারমা ছিল বিরাট। তখন প্রতিযোগিতা ছিল। চাকরির একটা ব্যাপার থাকত। এখন অবস্থা খুবই খারাপ। কাজ খুবই কম। কম্পিউইটারে সব সেভ করে রাখা হয় তাই দলিল লেখকরা কম্পিউটারে চলে যাচ্ছে।'
টাইপিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক গৌরীশংকর ঘোষের অভিযোগ, 'ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই পেশায় আসতে চাইছে না। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে স্থায়ী জায়গা চেয়েও পাওয়া যায়নি।'
বর্ধমান আদালতে দীর্ঘদিন ধরে প্র্যাক্টিস করেন আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস। তিনিও টাইপিস্টদের করুণ অবস্থা নিয়ে সরব। তাঁর কথা, 'এক সময়ে এই টাইপিস্টদের ছাড়া আদালতে কাজ হতো না। এখন আর তাঁদের সেই বাজার নেই।'
তবে কি ভবিষ্যতে হারিয়েই যাবে এই পেশা? এখন এটাই ঘুরপাক খাচ্ছে টাইপিস্টদের মনে।